শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৯:২০ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
ফেসবুক স্ট্যাটাসে গোলাম মাওলা রনি : কিসের নির্বাচন, কার নির্বাচন, কেমন নির্বাচন!

ডেক্স রিপোর্ট : বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী গোলাম মাওলা রনি নির্বাচন নিয়ে একটি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলা ধরা হয়েছে।

স্ট্যাটাসটিতে গোলাম মাওলা রনি লিখেন

আমি সারাজীবন যাকে গণতন্ত্রের মানস কন্যা বলে এসেছি এবং যার মঙ্গল কামনায় তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে বহুবার অঝোরে অশ্র বিসর্জন করেছি তার উদ্দেশ্যেই আজকে আমি দু’কলম লিখতে বসেছি।

আমি আওয়ামীলীগ থেকে বিএনপিতে গিয়েছি নিজের আত্মমর্যাদা ও রাজনৈতিক সত্ত্বা বাঁচিয়ে রাখার জন্য। কারণ আওয়ামী লীগ আমাকে বিগত দিনে একজন উটকো ঝামেলার আবর্জনা ও মূল্যহীন মনে করেছে। দলটিতে আগামী দিনেও যে আমার দু পয়সার মূল্য হবে না সেটা অনুমান করার পরই ভেবেচিন্তে বিএনপিতে যোগ দেই।

বিএনপির বর্তমান দুরাবস্থা ও সংকটকালে আওয়ামী লীগের মতো একটি নিরাপদ আশ্রয় ছেড়ে সংকটের সাগরে ঝাঁপ দেয়া কোন সাধারণ ঘটনা নয়। এমপি হওয়ার লোভ বা অন্য কোন কারণে কেউ এই কাজ করতে সাহস পাবেন না- যদি না কারো ভেতরে জাতীয় স্বার্থ এবং নিজের রাজনৈতিক সত্ত্বা বাঁচিয়ে রাখার আকাংখা সুতীব্র না হয়ে উঠে। আমি বিএনপিতে যাওয়ার পরও আমার সাবেক দল ও নেতা-নেত্রী সম্পর্কে কটুক্তি করিনি এবং কোন কালে সেটা সম্ভবও হবে না। বরং গণতান্ত্রিক শক্তি হিসেবে আওয়ামী লীগ বেঁচে থাকুক এই শুভ কামনা সব সময়ই থাকবে।


একাদশ সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে সারাদেশে এই মুহুর্তে যা হচ্ছে তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো শক্তি আমার নেই।

গণতন্ত্রের মানসকন্যার কথা বিশ্বাস করে আমি এবং আমার মতো যারা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় নির্বাচনকে অর্থবহ করার জন্য মাঠে নেমেছে তারা যে বর্তমানে কি দুর্ভোগ-দূর্দশা, বিপদ-বিপত্তি এবং প্রাণ সংহারী অবস্থার মধ্যে পড়েছি তা কেবল আসমানের মালিকই বলতে পারবেন। রাষ্ট্রযন্ত্রের আশ্বাস, প্রশ্বাস এবং আশ্রয় দেবার ক্ষমতার ওপর সাধারণ মানুষের যে অবিশ্বাস, অনাস্থা ও সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে তা কবে এবং কোথায় গিয়ে কিভাবে শেষ হয় তা যদি ক্ষমতাসীনরা ভাবতেন তবে আখেরে তাদেরই মঙ্গল হতো।

আমার নির্বাচনী এলাকা পটুয়াখালী-৩ সংসদীয় আসনের গলাচিপা ও দশমিনায় বিএনপির সামান্যতম নির্বাচনী কর্মকা- নেই। দুই উপজেলার বিএনপির অফিস তালাবদ্ধ। অন্ততঃ একশজন নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছেন। প্রায় হাজার খানেক সামর্থবান নেতাকর্মী এলাকা ছাড়া। দরিদ্র কর্মীরা পুলিশের ভয়ে বাড়ি ছাড়া হয়ে ধানক্ষেত, পানের বরজ ও ঝোপে জঙ্গলে রাত কাটাচ্ছেন। হাট-বাজার, দোকান পাট বেচা বিক্রি বন্ধ হতে চলেছে। কোন ভদ্রলোক বেইজ্জতি হবার ভয়ে পারত পক্ষে রাস্তায় বের হচ্ছেন না। লোকজনকে লাঞ্চিত অপমানিত ও মারধোর করে আওয়ামীলীগে যোগ দিতে বাধ্য করা হচ্ছে।

অন্য এলাকায় কি হচ্ছে তা বলতে পারবো না। তবে আমার এলাকায় পুলিশী নির্যাতন কিভাবে হচ্ছে তা যদি জননেত্রী জানতেন তবে নিশ্চয়ই তিনি ঘৃনায় তার সুবোধ বালকদের ভৎসনা করতেন। সমাজে যে ঘৃনা-বিদ্বেষ, প্রতিশোধ স্পৃহা দানা বাঁধছে তা অর্বাচীনেরা না বুঝলেও জননেত্রী যে বুঝেন তা আমি দিব্যি করে বলতে পারি। জাতির জনকের কন্যা, বঙ্গবন্ধু কন্যা অথবা গণতন্ত্রের মানসকন্যা হিসেবে তিনি যদি এদেশবাসীর মধ্যে বেঁচে থাকতে চান তবে একাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রশাসনীয় সন্ত্রাস তার সেই আশা-আকাংখার মূলে যে কতোবড় কুঠারাঘাত তা তিনি যদি এখনও বুঝতে পারেন তবে সকল পক্ষের জন্যই মঙ্গল।

 

 

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।