শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০১:১৯ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
বিমানের স্বামি-স্ত্রী সিন্ডিকেড এবার ধরা খেল প্রধানমন্ত্রীর ফ্লাইটে : বেরিয়ে এলো ছাত্রদল করার নেপথ্য কাহিনী !বিমান প্রশাসনের কিপয়েন্টে বসে থাকা কর্মকর্তা সিন্ডিকেডহোতা শাহজাহানের বন্ধু : একচ্ছত্র প্রভাব

বিশেষৃ সংবাদদাতা : বাংলাদেশ বিমানের স্বামি-স্ত্রী সিন্ডিকেড এবার ধরা গেল প্রধানমন্ত্রীর আমেরিকা ফ্লাইটে, বিধি বাম, তাই তাদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রীর ভিভিআইপি ফ্লাইটে অফলোড করা হয়। শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা শাহজাহান বিএনপি- জামায়াত কানেকটেট হবার সুবাধে জাতির জনকের জন্ম শতবার্ষিকীতে বিমানের সাবেক পরিচালক প্রশাসন পার্থ পন্ডিতের সন্ঞালনে অনুষ্ঠানে জাতির জনকের ওপর বক্তব্য দিতে অপারগকতা প্রকাশ করেন। এর নেপথ্য হিসেবে বেরিয়ে এসেছে শাহজাহানের ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে এফএইচ হলে ছাত্রদল করার কাহিনী এবং হলে মেস পরিচালনা কমিটির সদস্য হিসেবে কাজ করাসহ ছাত্রদলের মিছিল-মিটিংয়ে যোগদানের চান্ঞল্যকর তথ্য। তার ভাই গাইবান্ধা মাস্টার পাড়ারৃৃ বিএনপির ওয়ার্ড কমিটির নেতা বলেও জানা যায়।


মন্ত্রণালয় থেকে প্রেষণে আসা বিমান প্রশাসনের কি-পয়েন্টে বসে থাকা কর্মকর্তা শাহজাহানের ছাত্রজীবনের বন্ধু হবার সুবাধে তিনি ধরাকে সরা জ্ঞান করছেন।ৃ
কে এই শাহজাহান : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল করতেন শাহজাহান।এফএইচ হলের মেস পরিচালনা কমিটির কাজটিও করতেন শাহজাহান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিমানে কর্মরত এক কর্মকর্তা( ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগে শাহজাহানের সহপাঠি) জানান, শাহজাহান ছাত্রদল করতো, মিছিল-মিটিংয়ে যেত, আর তার ভাই গাইবান্ধা জেলার মাস্টার পাড়ার বিএনপির ওয়ার্ড কমিটির নেতা।


উল্লেখ্য, গত ১৭ মার্চ মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশ বিমান আয়োজিত আলোচনাসভায় শ্রমিক নেতাদের বক্তব্য প্রদানের আহবান জানানো হলে শাহজাহান বক্তৃতা প্রদানে অস্বীকৃতি ঙ্ঞাপন করেন। অনুষ্ঠানের প্রধান সঞ্চালক পার্থ পন্ডিত সাফ সাফ জানিয়ে দেন তিনি বংগবন্ধুর ওপরে কোন বক্তব্য দেবেন না।
শাহজাহানের ক্ষমতার উৎস কি বিমান প্রশাসনের এক কর্মকর্তা : মন্ত্রণালয় থেকে প্রেষণে আসা বিমান প্রশাসনের এক প্রভাবশালী কর্মকর্তা শাহজাহানের ছাত্র জীবনের বন্ধু হবান সুবাধে শাহজাহান ধরাকে সরা মনে করেন। তাই ২০ জন সিনিয়রকে ডিংগিয়ে শাহজাহানকে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়-ওই কর্মকর্তা শাহজাহানকে কুয়েত ফরেইন পোস্টিং প্রদান করে বন্ধুত্বের চুড়ান্ত দায় পরিশোধ করেছেন। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে শাহজাহান-শামীমা দম্পতিকে প্রধানমন্ত্রীর ভিভিআইপি ফ্লাইটে আমেরিকা যাবার জন্য তাদেও নির্বাচিত করা হয়, কিন্ত বিধি বাম। গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিকে শাহাজান-শামীমাকে প্রধানমন্ত্রীর ফ্লাইটে নিষিদ্ধ করা হয়।
শাহজাহান-শামীমার আদম পাচার- পিসিইউ বাণিজ্য জমজমাট : শাহজালাল বিমানবন্দরে শাহজাহান দম্পতির পিসিইউ- আদম পাচার বাণিজ্য অনেকটা ওপেন সিক্রেট। এর জন্য শামীমাকে আমিরাত ফ্লাইটে আজীবন নিষিদ্ধ করা হয়।
পিসিইউ সেকশনে থাকাকাীলন সময়ে শাহজাহানের স্ত্রী শামীমা পারভীন ত্রুটিপূন্য ভ্রমণ ডকুমেন্ট নিয়ে বিদেশগামি যাত্রি বা গলাকাটা পাসপোর্টধারি যাত্রীদের বোর্ডিং কার্ড ইস্যু করতেন এবং পিসিইউ গেটে তার স্বামি ওই সকল যাত্রীদের ক্লিয়ায়েন্স দিয়ে বিমানে ওঠিয়ে দিতেন।

এক পর্যায়ে বিষয়টি জানাজানি হলে শামীমাকে কাউন্টার থেকে সরিয়ে ফরেন এয়ার লাইন্সের চেকিং কাউন্টারে ( বোর্ডিং কার্ড ইস্যু) দায়িত্ব দেয়া হয়। সেখানেও তিনি অর্থলোভ সামলাতে পারেননি। আমিরাত এয়ার লাইন্সের কর্মকর্তা নওশাদের সাথে যোগসাজশে দুবাই ও লন্ডনে গলাকাটা পাসপোর্টে (পিসি) যাত্রী পাচার করতেন। বিষয়টি ধরা পড়ার পর নওশাদকে চাকরিচ্যুত্য করা হয়। এবং শামীমার সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি বিমানের তৎকালিন জিএমকে অবহতি করা হলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। আদম পাচারের পাশাপাশি শামীমা যাত্রীদের নিকট থেকে ব্যাগেজ মাসুল আদায় করে আত্মসাত করতেন। এ কাজে কতিপয় ক্লিনার শামীমাকে সহযোগিতা করতো। ফ্লাইট শেষে ক্লিনারদের থেকে তিনি টাকা গ্রহণ করতেন। এ দৃশ্য ক্যামেরায় ধরা পড়ার পর জিএম-এর নজরে আনলে শামীমা পারভীনকে আজীন আমিরাত ফ্লাইটে নিষিদ্ধ করা হয়। তাকে থাই এয়ারওয়েজের কাউন্টারে দায়িত্ব দেয়া হয়। সেখানেও তিনি সাউথ আফ্রিকাগামি একজন যাত্রীর থেকে আড়াই শ’ কেজি অতিরিক্ত ল্যাগেজ টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেন। থাই এয়ারওয়েজের স্টাফের অভিযোগে ল্যাগেজ এরিয়াতে ল্যাগেজ রিওয়েট করা হয়। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় শামীমা পারভিনকে আন্তর্জাতিক সব ফ্লাইটে নিষিদ্ধ করে ঢাকা আভ্যন্তরীন স্টেশনে বদলি করা হয়। সেখানেও তিনি বিদেশ থেকে আগত যাত্রী- যারা ডমেস্টিক গন্তব্যে যেতেন তাদের নিকট থেকে অতিরিক্ত ল্যাগেজ মাসুল আদায় করে আত্মসাত করতেন। তার এই অনৈতিক কান্ডে জিএম নূরুল ইসলাম হাওলাদার অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। কিন্ত তাকেও নানারকম উপহার সামগ্রি কিনে দিয়ে বশ করে ফেলেন। পরবর্তীতে সিবিএ’র সভাপতি ব্যাচমেট হওয়ায় তিনি তার আনুকুল্যু নিয়ে পুনরায় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফিরতে সক্ষম হন।
শাহজাহানের আদম পাচারের বিষয়টি এক সময় ওপেনসিক্রেট হয়ে পড়ায় তৎকালিন জিএম আতিক সোবহান তাকে নজরদারিতে রাখেন। গোপন খবরের ভিত্তিতে তিনি ফ্লাইটে ওঠার আগ মুহূর্তে রিয়াদগামি ৬ জন গলাকাটা পাসপোর্ট যাত্রীকে হোল্ডিং লাউন্ঞের ভিতর থেকে সনাক্ত করে অফলোড করেন। তখন শাহজাহান এককভাবে ডকুমেন্ট চেকিংয়ের দায়িত্বে থাকায় অপরাধ স্বীকার করেন। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা শুরুর প্রক্রিয়া হিসেবে তাকে কারণ দর্শানোর চিঠি দেয়া হয়।
তদন্ত চলমান থাকায় তাকে হজ¦ ফ্লাইটে যেতে দেয়া হয়নি। তবে পরবর্তী বছর তাকে হজ¦ পোস্টিং দেয়া হয়। কিন্ত অঙ্ঘাত শক্তির কারণে তার টিকিটিও স্পর্শ করা যায়নি। কেচো খুড়তে বেরিয়ে আসবে তাই শাহজাহানকে অব্যাহতি দেয়া হয়। শাস্তি হিসেবে তাকে পিসিও সেকশন থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। কিন্ত সুচতুর শাহজাহান জুনিয়র এডমিন অফিসার আনোয়ারকে ব্যবহার করে তার ব্যক্তিগত ফাইল থেকে তার আদম পাচারের অতীত সকল কাগজপত্র সরিয়ে ফেলেন, গায়েব করে দেন। ক্রমশ—

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।