একুশে বার্তা ডেক্স : করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে মাস্ক ব্যবহারের বিষয়ে আরো কঠোর হচ্ছে সরকার। ঘরের বাইরে মাস্ক ছাড়া বের হলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সাজায় কারাগারেও যেতে হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি এসেছে সরকারের তরফ থেকে। গত ৩০ নভেম্বর সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ কথা জানান। এর আগে গত মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বলেছিলেন, সপ্তাহখানেক দেখা হবে। তারপর জরিমানা বাড়ানো হবে। এখন সেটাই করতে যাচ্ছে সরকার।
মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিব জানান, সরকারিভাবে প্রথম দফায় করোনাভাইরাসের তিন কোটি ডোজ টিকা এনে তা এই মহামারি মোকাবিলায় যারা সামনে থেকে কাজ করছেন তাদের বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা ও ভ্যাকসিন সংগ্রহের সর্বশেষ অগ্রগতি সম্পর্কে গতকাল মন্ত্রিসভাকে অবহিত করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের তিন কোটি ডোজ সংগ্রহের প্রস্তাবে গত ১৪ অক্টোবর অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
এরপর গত ৫ই নভেম্বর সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া এবং বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের সঙ্গে সরকার চুক্তিও করেছে। ভ্যাকসিন কেনার জন্য ১৬ নভেম্বর অর্থ বিভাগ স্বাস্থ্যসেবা বিভাগকে ৭৩৫ কোটি ৭৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এখন ভ্যাকসিন কেনার প্রস্তাব অর্থনৈতিক ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে যাবে, সে প্রস্তাব চলে এসেছে।
প্রথম দফায় ভ্যাকসিন কারা পাবে- সেই প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটা গাইডলাইন আছে। প্রথম কারা পাবে, দ্বিতীয় ধাপে কারা পাবে, সে অনুযায়ী তারা একটা প্রোগ্রাম ডেভেলপ করছে। ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার- পুলিশ, প্রশাসনের লোক যারা মাঠে চাকরি করছে, তারপর বয়স্ক লোক, বাচ্চা- এরকম একটা প্রোটোকল আছে। সচিব বলেন, মানুষকে এই ভ্যাকসিন বিনা পয়সায় দেয়া হবে। টাকা সরকার পে করে দিচ্ছে। তিন কোটি ভ্যাকসিন ফ্রি দেয়া হবে। এই টিকা বিতরণে অনিয়ম হলে কী হবে- এমন প্রশ্নে আনোয়ারুল বলেন, করাপশন কেউ করলে আমাদেরকে জানাবেন, উই উইল টেইক অ্যাকশন।
মাস্ক পরার বিষয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আগেই আমরা বলেছি, এ সপ্তাহ থেকে আরেকটু স্ট্রং অ্যাকশনে যাব। আমার মনে হয় ঢাকার বাইরে কিছুটা পজেটিভ, ডিসিরা বলছেন জেলা সদরে মানুষ মোটামুটি কেয়ারফুল হচ্ছে। ঢাকা শহরে বোধহয় এখনো পুরোপুরি কেয়ারফুল হয়নি, তবে মোটামুটি একটা বার্তা যাচ্ছে যে ফাইন হয়ে যাবে, ফাইন দিতে হবে ৫০০ টাকা। বলে দিয়েছি, এখন থেকে ম্যাক্সিমাম ফাইন করো, না হলে আমরা আরো ইনস্ট্রাকশন দেবো, বলেছি সর্বোচ্চ জরিমানা করতে। তারপরও মাস্ক না পরলে কী হবে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, তারপরে জেলে যেতে হবে, আর কি করবে না যদি শোনে। আমরা তো ঝুঁকি নিতে পারি না, আমাদের যতটুকু সম্ভব করতে হবে, আমরা বলে দিয়েছি। মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে সারা দেশে যেভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালত চলছে, সেভাবে আরো ৭-১০ দিন চালিয়ে এরপর থেকে তাদের আরো কঠোর শাস্তি দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চ্যুয়াল এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এ বিষয়ে একটি নীতিমালা হচ্ছে। এ জন্য ভূমি সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে যে কেউ ইচ্ছেমতো বালু উত্তোলন করতে পারবেন না। নির্ধারিত ঠিকাদার নির্ধারিত পরিমাণ বালু উত্তোলন করতে পারবেন। কোথায় কোথায় বালুমহাল থাকবে, সেটিও চিহ্নিত করে দেয়া হবে।