শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৪:৪৮ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
৩২ ধারা অনুসন্ধ্যানী সাংবাদিকতার পথ রুদ্ধ করবে : বুলবুল

একুশে বার্তা ডেক্স : মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগের যথেষ্ট সুযোগ আছে বলে দাবি করেছেন সাংবাদিক ইউনিয়ন নেতা মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল। তিনি বলেন, এর সাথে যুক্ত হওয়া ৩২ ধারা অনুসন্ধ্যানী সাংবাদিকতার পথ রুদ্ধ করবে।

একদিন আগে আইনটি অনুমোদনের পর আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে ৩০ জানুয়ারি মঙ্গলবার চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্যে তিনি এই দাবি করেন।

বিএফইউজে সভাপতি বুলবুল বলেন, “আইসিটি অ্যাক্টে যখন ৫৭ ধারা ছিল, আমরা তার প্রতিবাদ করিনি। প্রতিবাদ করেছি তখন যখন দেখলাম বারবার এই ধারা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপব্যবহার করা হল। তখন আমরা বলেছি, এই আইনটির অপপ্রয়োগ বন্ধ করতে হবে।

“৫৭ ধারার পর সেসময় মন্ত্রী বলেছিলেন, অপপ্রয়োগ হবে না। আমরা দেখেছি অপপ্রয়োগ হয়েছে। সাংবাদিক সমাজের আশঙ্কা, নতুন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এমন সব ফাঁক আছে, যতই বলুক হবে না- তবু অপপ্রয়োগের যথেষ্ট সুযোগ আছে।”

তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা সাংবাদিক হয়রানি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্বের অভিযোগ উঠলে প্রতিবাদের মুখে ওই ধারাটি বাতিলের উদ্যোগের সঙ্গে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করছে সরকার।

সংসদে তোলার আগে সোমবার মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত আইনটিতে দেখা যায়, ৫৭ ধারার বিষয়বস্তুগুলোই রয়েছে নতুন প্রস্তাবিত আইনে।

পাশাপাশি এতে যুক্ত ৩২ ধারা অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার পথ রুদ্ধ করবে বলে গণমাধ্যমকর্মীরা মনে করেন।

সরকারি গোপনীয় তথ্য-উপাত্ত ডিজিটাল উপায়ে ধারণ, স্থানান্তর বা সংরক্ষণ করা এবং তাতে সহায়তাকে গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধ হিসেবে গণ্য করে ১৪ বছরের কারাদণ্ড বা ২৫ লাখ টাকা জরিমানার কথা বলা হয়েছে প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে।

বুলবুল বলেন, “৫৭ ধারা বা ৩২ ধারার মধ্য দিয়ে যদি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সঙ্কুচিত হয়, তাহলে আমরা শঙ্কিত। এখন বলা হচ্ছে ছবি তুললে গুপ্তচরবৃত্তি হবে। ফটোগ্রাফার তুললে সেটা পেশাগত কাজ, গুপ্তচরবৃত্তি নয়।”

আইনটি সংসদে পাস করার আগে সরকার এটি নিয়ে গণমাধ্যম প্রতিনিধি ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন বুলবুল।

তিনি বলেন, “যারা তথ্য প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে জাতির জনক ও মুক্তিযুদ্ধের প্রতি অবমাননা করবে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিরুদ্ধে, বাংলাদেশের অখণ্ডতার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাবে, নিশ্চয়ই তাদের বিচার হতে হবে।

“কিন্তু আমাদের উদ্বেগ অন্য জায়গায়। সন্ত্রাসী-জঙ্গিদের বিরুদ্ধে যে আইন ব্যবহার হবে, সেই আইনটি গণমাধ্যমকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করবেন কি না?”

একটি আইনের সঙ্গে অন্য আইনের জটিলতা নিয়েও কথা বলেন বুলবুল।

“তথ্যমন্ত্রী বলেছেন, সম্প্রচার কমিশন আইন করবেন। যদি সম্প্রচার কমিশন আইন হয় সেই কমিশনের সব ক্ষমতা থাকবে। আবার নতুন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একজন মহাপরিচালকের নেতৃত্বে কমিটি হবে। আপনি সম্প্রচার কমিশন আইন দিলেন, আবার একজন মহাপরিচালক দিলেন। কে কার অধীনে থাকবে? তাহলে তো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে।”

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রামের সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। সিইউজে সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিইউজে সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএফইউজে’র মহাসচিব ওমর ফারুক এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শাবান মাহমুদ।

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।