মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ১১:৪২ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
বাবুনগরী এবং তার অনুসারীরা আহমদ শফীকে মারা যেতে বাধ্য করেছেন, বিচার হওয়া উচিত

সাদিয়া নাসরিন: যুদ্ধাপরাধের বিচার চাইতে আমরা শাহবাগে ছিলাম রাতের পর রাত, দিনের পর দিন। পাশেই শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী গোলাম আজম ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় (পিজি) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কেউই তাকে হাসপাতাল ভেঙে,অবরুদ্ধ করে, মানসিক চাপ সৃষ্টি করে, ডাক্তার আসতে বাধা দিয়ে, বিনা চিকিৎসায় মেরে ফেলেনি।

অন্যান্য যুদ্ধাপরাধীরা বছরের পর বছর নিজেদের সর্বোচ্চ আইনি লড়াইয়ের সুযোগ নিয়েছেন, পেয়েছেন এবং যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় তাদের মৃত্যুদন্ড হয়েছে। একই প্রক্রিয়ায় যথাযথ নিয়মনীতি মেনে বিচার হয়েছে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদেরও। কারণ এটাই সভ্যতার পুলসিরাত। সরকার চাইলেই বিনা বিচারেও মেরে ফেলতে পারতেন এই ঘৃণ্য অপরাধীদের। বেশিরভাগ মানুষের সমর্থনও থাকতো আমি নিশ্চিত। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার রাষ্ট্রক্ষমতায় থেকেও তা করেননি। কেন করেননি সেই আলোচনার প্রয়োজন দেখছি না। কোনো সভ্য সরকারই তা করবেন না। হেফাজতে ইসলামের আমীর আহমদ শফী প্রকৃৃতই একজন নারী বিদ্বেষী ছিলেন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। মুক্তিযুদ্ধে তার ভূমিকার কারণেই আমার রাজনৈতিক অবস্থান তার বিপরীত মেরুতে অবশ্যই। কিন্তু যে কারণে একজন ধর্ষকেরও বিনা বিচারে শাস্তি আমি চাই না, যুদ্ধাপরাধীরও বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু আমি কামনা করি না, ঠিক একই কারণে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বলেই কারও অবরুদ্ধ মৃত্যু আমি সমর্থন করি না। প্রশাসনের প্রবেশ আটকে, তিনদিন যাবৎ শতোর্ধো এই বৃদ্ধকে অবরুদ্ধ রেখে ভয়ানক মানসিক চাপ সৃষ্টি করে, হয়রানির মুখে অসুস্থ হয়ে পড়লে অ্যাম্বুলেন্স আটকে রেখে চিকিৎসায় বাধা দিয়ে বাবুনগরী এবং তার অনুসারীরা যে অরাজকতার মধ্যদিয়ে আহমদ শফীকে মৃত্যুবরণ করতে বাধ্য করেছেন, তার যথাযথ বিচার হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।

বছরের পর দেশের প্রচলিত আইন, শিক্ষা ব্যবস্থা, অর্থনৈতিক অবকাঠামোর নিয়ন্ত্রণের বাইরে থেকে, সরকারের আপোস রফার প্রশ্রয় পেয়ে এই বিশাল কওমি জনগোষ্ঠি যে শক্তি সঞ্চয় করেছে, তার ছোট নমুনা দেখালো হাটহাজারি মাদ্রাসায় গত কয়দিনের তাণ্ডবে। আহমাদ শফীর এই মৃত্যু কিংবা পরোক্ষ হত্যা থেকে সরকার কোনো বার্তা নেবেন কিনা সেটা সরকার জানেন। তবে আমরা যে পরিষ্কার বার্তাটি পেলাম তাহলো, কঠিন হাতে দমন করতে না পারলে ফ্রাঙ্কস্টাইনের এই দৈত্য আর ট্রেইলরে থাকবে না, পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র হয়ে পূর্ণপ্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে। ফেসবুক থেকে/ আমাদের সময়ডটকম

 

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।