বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১১:৩৬ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
„যেখানেই বিএনপির সমাবেশ সেখানেই পরিবহণ ধর্মঘট!

নিউজ ডেক্স: ১২ অক্টোবরে চট্টগ্রামে গণসমাবেশের মধ্য দিয়ে বিভাগীয় সাংগঠনিক কর্মসূচী শুরু করেছে বিএনপি। এরপর ১৫ অক্টোবর ময়মনসিংহ, ২২ অক্টোবর খুলনায় এবং ২৯ অক্টোবর রংপুর বিভাগীয় গণসমাবেশ করে দলটি। আগামী ৫ নভেম্বর বরিশালে অনুষ্ঠিত হবে গণসমাবেশ। ইতিমধ্যে ৪টি বিভাগীয় গণসমাবেশে নানা বাধা ও পরিবহণ ধর্মঘট উপেক্ষা করেও লাখ লাখ মানুষ যোগ দিয়েছে সমাবেশে।

বিএনপি নেতারা বলছে, চট্টগ্রামে সমাবেশে পথে পথে সরকার দলের নেতাকর্মীদের দ্বারা কম বাধার সম্মুখীন হলেও ময়মনসিংহ, খুলনা ও রংপুর সমাবেশের আগেরদিন থেকে বন্ধ রাখা হয় গণপরিবহণ। সমাবেশে যাওয়ার পথে বাধা বিপত্তি, হামলার শিকার হন নেতাকর্মীরা। বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ, সমাবেশের দুইদিন আগেই গণপরিবহণ বন্ধ, পুলিশি গ্রেফতার ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলার মুখেও পিছু হটেনি বিএনপি নেতাকর্মীরা। সকল বাধা উপেক্ষা করেই সমাবেশ সফল করতে হাজির হন তারা।

বিএনপির অভিযোগ, সমাবেশ বিঘ্ন ঘটাতে সবধরনের বাধা সৃষ্টি করে আওয়ামী লীগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।  তবুও তাদের নেতাকর্মীরা গ্রেফতার, হামলা মামলার ভয়ভীতি উপেক্ষো করে সমাবেশে জড়ো হন। সরকার যতই কৌশলী হয় না কেন বিএনপি তাদের সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটছে না আর। এমনকি সামনের সমাবেশগুলোতে সরকারি দলের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সমাবেশ সফল করতে রাজপথে থেকেই আন্দোলন চালিয়ে যাবে তারা।

ইতিপূর্বে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ ঘিরে খুলনা, বরিশাল ও রংপুরে পরিবহন ধর্মঘট ডাক দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরিবহন মালিক ও শ্রমিকেরা দাবি হিসেবে মহাসড়কে নছিমন-করিমন, ইজিবাইক ও বিআরটিসি বাস চলাচল বন্ধ এবং ভাড়ায় মোটরসাইকেলে যাত্রী পরিবহন বন্ধের কথা বলেছেন।

বিএনপির সভা-সমাবেশে বাধা দেওয়া ও পরিবহণ ধর্মঘট প্রসঙ্গে গত বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপির সভা-সমাবেশ করা নিয়ে আমরা কোনো বাধা দিচ্ছি না। যেখানে করতে চাচ্ছে, সেখানেই করছে। এখন বাস আসবে কি আসবে না, সেটা নিয়ন্ত্রণ করে বাস মালিক সমিতি এবং শ্রমিক সমিতি। তারা কী করবে না করবে এটা তাদের ব্যাপার। বিএনপির সমাবেশ ঘিরে ধর্মঘট ডাকার পেছনে ভিন্ন কারণ থাকতে পারে। অগ্নিসংযোগের ভয়ে সড়কে গাড়ি না নামিয়ে থাকতে পারেন পরিবহনমালিক ও শ্রমিকেরা। মালিক-শ্রমিকেরা যদি মনে করেন, তাঁদের বাস, ট্রাক তথা যানবাহনটি (হামলা থেকে) নিরাপদ নয়, তাহলে তাঁরা রাস্তায় নামাতে না-ও পারেন। এ জন্য তো আমরা তাঁদের ফোর্স (বাধ্য) করছি না। এ ব্যাপারে তাঁরা স্বাধীন, তাঁরা কী করবেন, না করবেন সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার।

তবে বিএনপি বলছে, যেখানে তাদের সমাবেশ শুধু কি সেই অঞ্চলের সড়ক মহাসড়কে নছিমন-করিমন চলে? নাকি সারাদেশেও চলে? যদি এসব দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দিয়ে থাকে তাহলে সারাদেশে দিবে। শুধু যেখানেই বিএনপির সমাবেশ সেখানেই বাস ধর্মঘট দিবে! নিশ্চয়ই এখানে পরিবহণ মালিকদের বাধ্য করছে সরকার। তবে ধর্মঘট নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিএনপি নেতা-কর্মীরা বলছেন, বাস কিংবা গণপরিবহন বন্ধ করে মানুষের উপস্থিতি ঠেকানো যাবে না।

এদিকে, আগামী ৫ নভেম্বর বরিশালে অনুষ্ঠিত হবে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ। এই বিভাগেও সমাবেশের আগেই মহাসড়কে তিন চাকার অবৈধ যান ও ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল বন্ধের দাবিতে আগামী ৪ ও ৫ নভেম্বর বরিশাল থেকে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে বাস মালিকদের সংগঠন বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপ। বিএনপির দাবি, বিভাগীয় গণসমাবেশ বানচাল করতেই এই অপকৌশল নেওয়া হয়েছে। এর আগে একই কায়দায় খুলনা ও ময়মনসিংহ ও রংপুরে পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা মহাসড়কে নছিমন-করিমন, ইজিবাইক ও ভাড়ায় মোটরসাইকেলে যাত্রী পরিবহন বন্ধের অযুহাতে পরিবহন ধর্মঘট ডাক দিয়েছে, এটা একটা হাস্যকর ঘটনা। কারণ যে দাবিতে এই ধর্মঘটের ডাক সেই নছিমন, করিমন ও মোটরসাইকেলে চড়েই নেতাকর্মীরা সমাবেশে এসেছেন। তিনি বলেন, এখানে পরিবহণ মালিক শ্রমিকদের চাপ দিয়েই ধর্মঘট দিতে বাধ্য করেছে সরকার। কারণ, যদি শুধুমাত্র ছোট তিন চাকার গাড়ি ও ভাড়ায় মোটর সাইকেল চলাচল বন্ধে ধর্মঘট দিতো তাহলে সরকারি বিআরটিসি পরিহণ কেন চলেনি। নিশ্চয়ই সরকার এগুলো ঘটিয়েছে। তবে, যতই বাধা দিয়ে থাকুক না কেন, বিএনপির এই গণজোয়ার বন্ধ করতে পারবে না। বরং বিএনপির নেতাকর্মীরা আরও মনোবল নিয়েই আন্দোলনে রাজপথে নেমেছে। আমাদের সময়ডটকম

 

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।