রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৫:৫৮ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
খিলক্ষেতে ৬০ ফুটের রাস্তা  দখল করে ১২ ফুট করে দোকানপাট বসিয়ে আসলাম বাহিণীর চাদাবজি  থেমে নেই: পুলিশ নীরব : কমিশনার ইসহাক মিয়া বললেন ব্যবস্থা নেয়া হবে

একুশে বার্তা ডেক্স : রাজধানীর খিলক্ষেতে অবৈধভাবে বাজার ও দোকান বসানোর কারণে   ৬০ ফুটের রাস্তা মাত্র ১২ ফুটে পরিণত হয়েছে।  এ সব দোকানপাট থেকে মাসিক  সাপ্তাহিক ও দৈনিক ভিত্তিতে রীমিতম চাদাবাজি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।এ জন্য জন ভোগান্তি বেড়েছে। পাশাপাশি সড়কে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া অবৈধভাবে   বাজার বসিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক নেতারা ১০-১২ বছর ধরে মোটা অঙ্কের  চাদা হাতিয়ে নিচ্ছেন।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রধান সড়কসহ বিভিন্ন স্থানে রাস্তা দখল করে অবৈধভাবে বসানো বাজার ও দোকানপাট থেকে প্রতিমাসে ৫০ লাখ টাকার বেশি চাঁদা উঠছে। দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক ভিত্তিতে টাকা তোলা হচ্ছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অভিযোগ খিলক্ষেত থানা আওয়ামী লীগের সদ্য বিদায়ি সাধারণ সম্পাদক আসলাম উদ্দিন ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।

ইতিপূর্বেও এই আসলামকে নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, কিন্ত তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাই নেয়া হয়নি। এবার পদ হারালেও তার প্রভাবে তার বাহিনীর সদস্যরা অবৈধভাবে  দোকানপাট ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা থেকে রীতিমত চাদাবাজি করছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।

সিটি করপোরেশনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ও পুলিশকে ম্যানেজ করে চাঁদবাজি চলছে। এ নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে পুলিশ সদস্যদের বাগ্বিতণ্ডা হচ্ছে।  স্থানীয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সরেজমিন খিলক্ষেতে দেখা যায়, বাসস্ট্যান্ড এলাকার ফুট ওভারব্রিজ, যাত্রী ছাউনি, রেললাইনের দুই পাশ ও প্রধান সড়কের দুই পাশের ফুটপাতে অবৈধ বাজার বসেছে। খিলক্ষেত মান্নান প্লাজা থেকে খাঁপাড়া পর্যন্ত রাস্তায় বসেছে বাজার। স্থায়ী-অস্থায়ী সব মিলিয়ে পাঁচ শতাধিক দোকান আছে।

দোকানভেদে ১৫০ থেকে তিন হাজার টাকা চাঁদা তোলা হয়। ৪০টি দোকান থেকে ১৫০ টাকা করে চাঁদা নেওয়া হয়। বাকি দোকানগুলো থেকে দৈনিক দুই থেকে তিন হাজার টাকা করে চাঁদা ওঠে। ভোরে কাঁচাবাজার ও মাছের দোকান থেকে টাকা নেওয়া শুরু হয়। সকাল ৮টা থেকে ফলের দোকানসহ বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় মালামালের দোকান থেকে চাঁদা তোলা শুরু হয়।

স্থানীয় মনির মোল্লা ও সিরাজ উদ্দিন চাঁদা তোলেন। দোকানগুলোয় বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েও টাকা তোলা হচ্ছে। দোকানভেদে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।

ডিএনসিসির কাউন্সিলর ইসহাক মিয়া যুগান্তরকে বলেন, অবৈধ বাজারের কারণে ৬০ ফুটের রাস্তা ১২ ফুট দৃশ্যমান। সড়কটি দখলমুক্ত করতে সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগে বোর্ড মিটিং হয়েছে। যে কোনো সময় উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি যুগান্তরকে বলেন, সমাজে কিছু খারাপ লোক আছে। তারা সংখ্যায় কম হলেও অনেক শক্তিশালী। থানা পর্যায়ের সড়কে অবৈধ বাজার বা দোকানাপাট বসিয়ে কোনো আওয়ামী লীগ নেতা চাঁদাবাজি এবং যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে, তা মেনে নেওয়া যায় না। এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয়রা জানায়, ৩-৪ বছর আগে উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করে রাস্তা দখলমুক্ত করা হয়েছিল। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে। কিন্তু উচ্ছেদের মাস দুয়েকের মধ্যে রাস্তাটি আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসে। অটোরিকশাচালক মামুন বলেন, প্রভাবশালীরা কেবল অবৈধ বাজার-দোকান থেকেই চাঁদা আদায় করে না, দুই হাজার ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অটোরিকশা থেকেও মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করে।

আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের নিয়োজিত লাইনম্যানরা ব্যাটারিচালিত রিকশা থেকে ৫০ টাকা এবং অটোরিকশা থেকে ৭০ টাকা করে দৈনিক চাঁদা আদায় করে। চাঁদা তোলেন আওয়ামী লীগ নেতা আসলামের অনুসারী আমীন গাজী, রাজু ও সোহরাব। এর একটা অংশ পুলিশকে দেওয়া হয়। তা না হলে অটোরিকশা নিয়ে যায়। বাজারের একাধিক দোকানি বলেন, জুলুম করে আমাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছে। দিনদিন টাকার অঙ্ক বাড়ছে। আমরা অনেকদিন ধরে এখানে ব্যবসা করছি। এখন দোকান ছেড়ে দিলে পথে বসে যাব।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে খিলক্ষেত থানা আওয়ামী লীগের সদ্য বিদায়ি সাধারণ সম্পাদক আসলাম উদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, প্রভাবশালী নেতাদের কতিপয় লোক চাঁদাবাজি করছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনে অভিযোগও দেওয়া হয়েছে।

খিলক্ষেত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুন্সি সাব্বির আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, গরিব মানুষ রাস্তা দখল করে বাজার বসিয়েছে। অভিযান চালালে তারা চলে যায়। পরে আবার বসে। শিগগিরই আবার কাজ শুরু করব। চাঁদাবাজির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।নিজস্ব সূত্র/যুগান্তর

 

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।