মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০১:১৪ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
ঈদ মোবারক

সম্পাদকীয়: ঈদ অর্থ আনন্দ, উৎসব। ফিতর শব্দের অর্থ রোজা ভাঙা, হালকা নাশতা করা। এই হচ্ছে ঈদুল ফিতর। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর এই দিনে খাওয়া-দাওয়ার অনুমোদন মেলে।

সেই আনন্দ ও খুশি সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে ইসলাম এই দিনকে উৎসবের দিন হিসেবে প্রবর্তন করে। এই দিনে মুসলমানরা উত্তম জামাকাপড় পরে ঈদগাহে গিয়ে নামাজ আদায় করেন এবং আল্লাহর কাছে রমজানের ভালো কাজগুলো কবুল করার আরজি পেশ করেন। মানুষের সঙ্গে কুশলবিনিময়, সালাম-মুসাফাহা-কোলাকুলি, নানা স্বাদের খাবারের আয়োজন-আপ্যায়ন, স্বজনদের খোঁজখবর নেওয়া ইত্যাদি কাজ দিনটিকে তাৎপর্যময় করে তোলে; বিশেষ করে জাকাত-ফিতরা ও সাধারণ দানের মাধ্যমে সমাজের অসহায় মানুষের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে সমতাভিত্তিক সমাজ গঠনের ডাক দেয়।

ঈদের দিনে কারও প্রতি শত্রুতা, বিদ্বেষ বা হিংসা রাখা বারণ। প্রাণের শত্রুকেও উষ্ণ আলিঙ্গনে আপন করে নেওয়ার শিক্ষা দেয় ঈদ। অমুসলিমদের সঙ্গেও ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ইসলামে কোনো বিধিনিষেধ নেই। ফলে ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সব সম্প্রদায়ের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত উদ্‌যাপন দিনটিকে সর্বজনীন উৎসবে পরিণত করে এবং সমাজের পরতে পরতে সমতা, মানবিকতা, সহানুভূতি, সম্প্রীতি ও সহাবস্থানের বার্তা ছড়িয়ে দিতে এই দিন অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।

আনন্দের উৎসব ঈদ যেন সমাজের প্রত্যেক মানুষের জীবনে খুশি ও আনন্দ বয়ে আনে, সে জন্য নিজেদের অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা আমাদের কর্তব্য। মালিক যদি শ্রমিককে যথাসময়ে প্রাপ্য বুঝিয়ে না দেন, ক্ষুদ্র চাকরিজীবীর বেতন যদি সে যথাসময়ে হাতে না পায়, তবে তাদের পরিবারের ঈদের খুশি তো মাটি হতে বাধ্য। তেমনি সমাজের গরিব-অসহায়দের দানও যেন তাদের যথাসময়ে আনন্দিত করতে পারে, সেই বন্দোবস্ত করা উচিত। এ ছাড়া ছোটদের খুশি করতে সাধ্যমতো ঈদের সালামি দিতে যেন আমরা না ভুলি। তবেই ঈদ হবে সত্যিকারের এক সম্প্রীতি ও আনন্দের উৎসব।

শহুরে কর্মজীবী মানুষ এ সময় প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগ করতে গ্রামের বাড়ি যান। তাঁদের ঈদযাত্রা ঘিরে সব ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কর্তব্য। যাত্রাপথের ভোগান্তি কমাতে এবং পরিবহনব্যবস্থার সর্বোচ্চ শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে সবারই আন্তরিক ভূমিকা জরুরি। ঈদ ঘিরে সব ধরনের অপরাধ ও শান্তি বিনষ্টকারী অপচেষ্টা কঠোরভাবে দমন করতে হবে।

হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিসসহ সরকারি-বেসরকারি জরুরি সেবা কার্যক্রম যেন কোনোভাবেই ব্যাহত না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং ঈদ-পরবর্তী পর্যটনকেন্দ্রগুলোর শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

এবারের ঈদে আমাদের একান্ত প্রত্যাশা—রাষ্ট্র ও সমাজ সব সংকট-সমস্যা কাটিয়ে উঠুক। মজবুত হোক আমাদের জাতীয় ভ্রাতৃত্ববোধ। সব ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠী, রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক দলমতেরমানুষের মধ্যে গড়ে উঠুক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের বন্ধন। সহনশীলতা, সহাবস্থান ও পরমতসহিষ্ণুতার চর্চা হোক সমাজের সর্বত্র।

আমাদের প্রিয় পাঠক, লেখক, বিজ্ঞাপনদাতা, এজেন্ট, শুভানুধ্যায়ী—যে যেখানেই আছেন, সবাইকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা। ঈদ মোবারক।

 

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।