রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ১০:৩৫ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
পানামা-প্যারাডাইস পেপারসে অর্থ পাচারকারীর তালিকা : আওয়ামীলীগ নেতা কাজী জাফর উল্লাহ পরিবারসহ ৮২ জনের সম্পদের খোঁজে দুদক : ২০১৪ সালেই বাংলাদেশ থেকে পাচার ৯১১ কোটি ডলার

একুশে বার্তা ডেক্স : আইনি জটিলতায় পানামা ও প্যারাডাইস পেপারসে অর্থ পাচারের তালিকায় নাম আসা বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্ত এগোচ্ছে না। কারণ অর্থ পাচার অনুসন্ধান সংক্রান্ত বিদ্যমান আইন প্রয়োগের এখতিয়ার আরও তিনটি প্রতিষ্ঠানের ওপর ন্যস্ত। এমন পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে পাচারকারীদের বিষয়ে যেসব তথ্য-উপাত্ত আছে, সেগুলো চাওয়া হয়েছে।

গত এক বছরে বিভিন্ন সময়ে এসব তথ্য চাওয়া হয়। কিন্তু অদ্যাবধি কোনো তথ্য দেয়নি প্রতিষ্ঠানগুলো। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত চেয়ে সংশ্লিষ্ট দেশের কাছে এমএলএআর (মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিসস্ট্যান্স রিকোয়েস্ট) পাঠানো হয়েছে। আর আইনগত জটিলতায় দীর্ঘসূত্রতার কারণে বিকল্প হিসেবে ওই পেপারসে নাম আসা অর্থ পাচারকারী অন্তত ৮২ জন বাংলাদেশির সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করতে যাচ্ছে দুদক। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।

২০১৬ সালের এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস (আইসিআইজে) পানামা পেপারসে অর্থ পাচারকারী অন্তত ৫২ জন বাংলাদেশির নাম প্রকাশ করেছিল। গণমাধ্যমে তাদের নাম-পরিচয় প্রকাশের পর দুদক স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে প্রায় দু’বছরেও ওই অনুসন্ধান শেষ করতে পারেনি। এরই মধ্যে প্যারাডাইস পেপারসে আরও দুটি তালিকা প্রকাশিত হয়। দুদক কর্মকর্তারা বলছেন, পানামা ও প্যারাডাইস পেপারস কেলেঙ্কারিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে শক্ত কোনো ব্যবস্থা নিতে না পেরে তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের সম্পদ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

এ বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ  বলেন, যখন পানামা পেপারস কেলেঙ্কারিতে জড়িতদের বিষয়টি সামনে আসে, তখন দুদকের হাতে যে কোনো ব্যক্তির অর্থ পাচারের অনুসন্ধানের আইনটি ছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে আইনটি ভাগ হয়ে চার জায়গায় চলে গেছে। আমরা এখন জড়িতদের তালিকা ধরে তাদের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান করার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ভাবছি।’

তিনি বলেন, ট্রেড বেজড মানি লন্ডারিং হলে তার তদন্তের দায়িত্ব এনবিআরের, ক্রিমিনাল অ্যাকটিভিটিজের মাধ্যমে লন্ডারিং হলে তার তদন্ত করবে সিআইডি এবং আর্থিক বিষয়াদি দেখবে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিএফআইইউ। ইকবাল মাহমুদ আরও বলেন, জড়িতদের বিরুদ্ধে যদি সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্য পাওয়া যায়, তখন আমরা তাদের ডাকব এবং জিজ্ঞাসাবাদ করব।

এ ছাড়া দুদক সচিব ড. শামসুল আরেফিন  বলেন, আমরা এ পর্যন্ত যাদের নাম পেয়েছি পর্যায়ক্রমে সবার বিরুদ্ধেই অনুসন্ধান শেষ করব। তিনি জানান, অনুসন্ধান টিম পানামা পেপারস তালিকার ১৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিশ করে। তাদের মধ্যে ৯ জন দুদকে এসে বক্তব্য দিয়ে গেছেন। ৬ জনের ঠিকানা সঠিক না থাকায় তাদের নোটিশ ঝুলে আছে।

পানামা ও প্যারাডাইস পেপারসে উঠে আসা অর্থ পাচারের ঘটনা ছাড়াও নানাভাবে দেশ থেকে অর্থ পাচারের ঘটনা ঘটছে। ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালেই বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৯১১ কোটি ডলার পাচার হয়েছে। স্থানীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৭২ হাজার ৮৭২ কোটি টাকা। আমদানি-রফতানির সময়ে পণ্যের প্রকৃত মূল্য গোপন করার মাধ্যমেই এ অর্থের বড় অংশ পাচার করা হয়েছে। গত বছরের ২ মে সংস্থাটির প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে দুদক থেকে তখনও ওই অর্থ পাচারের অনুসন্ধানের উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু আইনি সীমাবদ্ধতার কারণে অনুসন্ধান কাজ আর বেশিদূর এগোয়নি।

দুদকের সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশ থেকে নানা কায়দায় অর্থ পাচার এবং প্যারাডাইস ও পানামা পেপারসের তালিকায় স্থান পাওয়া বাংলাদেশিদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত চেয়ে সংশ্লিষ্ট দেশের কাছে এমএলএআর (মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিসস্ট্যান্স রিকোয়েস্ট) পাঠানো হয়েছে। তদন্তের অংশ হিসেবে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে কোনো দেশ থেকেই কারও বিরুদ্ধে কোনো তথ্য এখনও পর্যন্ত আসেনি। ইউরোপের দেশ মাল্টা ও ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডে অফশোর কোম্পানি খুলে বাংলাদেশিরা অর্থ পাচার করছেন। তবে ওই দেশগুলো জাতিসংঘের দুর্নীতিবিরোধী দেশ হিসেবে স্বাক্ষরকারী দেশ (ইউনাইটেড নেশনস কনভেনশন আগেইনস্ট করাপশন বা ইউএনসিএসি) না হওয়ায় তারা কোনো তথ্য দিয়ে সহায়তা করছে না।

এদিকে দুদক ছাড়াও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) পানামা পেপারস কেলেঙ্কারিতে নাম আসা বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ তদন্ত করছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে এনবিআর ওই ৫২ জনের মধ্যে ২৯ জনের অভিযোগ তদন্ত করছে। আর প্রথম তালিকার বাকি ২৩ জনের বিষয়ে তদন্ত করছে বিএফআইইউ। দুদকের পরিচালক মীর জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বে উপপরিচালক আখতার হামিদ ভুইয়া ও সহকারী পরিচালক মুজিবুর রহমান পানামা পেপারসে আসা বাংলাদেশিদের বিষয়ে অনুসন্ধান করছেন। টিমের একজন কর্মকর্তা  বলেন, এনবিআর ও বিএফআইইউ তদন্ত করে কী তথ্য পেয়েছে আমরা তা চেয়েছি। তিনি বলেন, এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান কোন কোন দেশে, কীভাবে, কোন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অর্থ পাচার করেছেন- সে বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছেও তথ্য চাওয়া হয়েছে।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট অপর এক কর্মকর্তা বলেন, অর্থ পাচারের সব ঘটনা দুদক এখন আর অনুসন্ধানের জন্য নিতে পারে না। ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং আইন সংশোধন করে (সংশোধিত আইন ২০১৫) বিদেশে যে কোনো ব্যক্তির অর্থ পাচারের তদন্তের ক্ষমতা দেয়া হয় বিএফআইইউ, এনবিআর এবং কিছু কিছু অর্থ পাচারের বিষয়ে মামলা ও তদন্তের এখতিয়ার দেয়া হয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা সিআইডিকে দেয়া হয়। এ ভাগাভাগির কারণে অর্থ পাচারের অপরাধ তদন্তে দুদকের ক্ষমতা সংকুচিত হয়ে পড়ে। দুদক শুধু সরকারি কর্মকর্তাদের অর্থ পাচারের অনুসন্ধান করতে পারবে। তারপরও বেসরকারি ব্যক্তিদের অর্থ পাচারের ঘটনা অনুসন্ধানের দায়িত্ব নেয়ায় দুদক তাদের কার্যক্রম সচল রেখেছে।

দুদক সূত্র জানায়, পানামা পেপারসের প্রথম তালিকায় স্থান পাওয়া যে নয়জনকে প্রথম দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ৪ জন দাবি করেছেন, পানামা পেপারসে যে অর্থের কথা বলা হয়েছে, তা বাংলাদেশ থেকে যায়নি। বিদেশে উপার্জিত অর্থই সেখানে বিনিয়োগ করা হয়েছে। আরেকজন দাবি করেছেন, ইউরোপের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা অর্থই ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডে অফশোর কোম্পানিতে লগ্নি করা হয়েছে। আরেকজন দাবি করেছেন, এটি একটি স্বতঃসিদ্ধ পদ্ধতি। যেহেতু এ উপার্জনের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক নেই এবং এ দেশ থেকে কোনো অর্থও নেয়া হয়নি। তাই অফশোর কোম্পানিতে বিনিয়োগের বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংককে জানানোর প্রয়োজনীয়তাও তারা উপলব্ধি করেননি।

পানামা পেপারস নিয়ে দুদকের তদন্তে হতাশা প্রকাশ করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, প্যারাডাইস পেপারসে বাংলাদেশের যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশিত হয়েছে, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য সংগ্রহে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), দুর্নীতি দমন কমিশন এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে সমন্বিত প্রয়াসের মাধ্যমে পাচারকৃত টাকা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি জড়িতদের অপরাধ প্রমাণসাপেক্ষে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

পানামা পেপারসে স্থান পাওয়া যেসব বাংলাদেশির সম্পদের বিষয়ে দুদক অনুসন্ধান শুরু করতে যাচ্ছে, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন- আওয়ামী লীগ নেতা কাজী জাফরউল্লাহ, তার স্ত্রী কাজী নিলুফার জাফর, ছেলে কাজী রায়হানুল জাফর, রায়হানুলের স্ত্রী ফাহরা মুরাদ, কাজী জাফরউল্লাহর বোন সাবিহা মাহবুব, ভগ্নিপতি আবদুল্লাহ আহসান ইউসুফ, ভাগ্নে আবদুল্লাহ ইমরান ইউসুফ ও আবদুল্লাহ আহসান ইউসুফ। এদের মধ্যে জাফরউল্লাহর বোন, ভগ্নিপতি ও ভাগ্নেরা নিউজিল্যান্ডে বসবাস করছেন। এ ছাড়া আরও যাদের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে, তাদের মধ্যে আছেন- সামিট ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড মার্কেন্টাইল কর্পোরেশন প্রাইভেট লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও পাঁচ পরিচালক। এ ছাড়া ইউনাইটেড গ্রুপের চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ রাজা, পরিচালক খন্দকার মইনুল আহসান (শামীম), আহমেদ ইসমাইল হোসেন ও আখতার মাহমুদ, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক সভাপতি এএমএম খান, খুলনার পাট ব্যবসায়ী দিলীপ কুমার মোদি, সি পার্ল লাইন্সের চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ সিরাজুল হক, বাংলা ট্রাক লিমিটেডের আমিনুল হক, নাজিম আসাদুল হক, তারিক ইকরামুল হক, ওয়েস্টার্ন মেরিনের পরিচালক সোহেল হাসান, মোমিন টি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজমত মঈন, মাসকট গ্রুপের চেয়ারম্যান এফএম জুবাইদুল হক, তার স্ত্রী সালমা হক (এরই মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে), সেতু কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, তার স্ত্রী উম্মে রব্বানা, অমনিকেম লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইফতেখারুল আলম, তার পুত্রবধূ ফওজিয়া নাজ, আবদুল মোনেম লিমিটেডের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক এএসএম মহিউদ্দিন আহমেদ, তার স্ত্রী আসমা মোনেম, অনন্ত গ্রুপের শরীফ জাহির, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপ বিল্ডার্সের ক্যাপ্টেন সোহাইল হাসান, বিবিটিএলের পরিচালক এএফএম রহমাতুল্লাহ বারী, ক্যাপ্টেন এমএ জাউল, মির্জা এম ইয়াহইয়া, মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, সৈয়দা সামিনা মির্জা এবং জুলফিকার হায়দার।

অনুসন্ধান টিমের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা ৫২ জনের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে আরও কিছু নাম পেয়েছি। সব মিলিয়ে পানামা পেপারসের প্রায় ৬১ বাংলাদেশির সম্পৃক্ততা আছে বলে আমরা ধারণা করছি।’

এদিকে এনবিআরের একজন পদস্থ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে  বলেন, আমাদের গোয়েন্দা সেল বেশ কয়েকজন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অর্থ পাচারের বিষয় তদন্ত করছে। তদন্তকালে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে- তারা বিদেশে কোন মাধ্যমে অর্থ পাঠিয়েছেন। তাদের অনেকেই সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। তিনি বলেন, যাদের নাম পানামা পেপারস কেলেঙ্কারিতে যুক্ত হয়েছে তারা প্রভাবশালী। কিন্তু অর্থ পাচারের তথ্য নিশ্চিত হওয়ার পর অভিযুক্ত ব্যক্তি যতবড় প্রভাবশালীই হোক না কেন তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি জানান, প্যারাডাইস পেপারসে যাদের নাম এসেছে তাদের বিষয়েও খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।

এ ছাড়া গত ১৫ ফেব্র“য়ারি প্যারাডাইস পেপারসে বিতর্কিত ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসেরসহ আরও ২০ বাংলাদেশির নাম আসে। এদের সবাই অবৈধভাবে দেশ থেকে ইউরোপের দেশ মাল্টায় অর্থ পাচার করেছেন বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস (আইসিআইজে)-এর তৃতীয় ধাপের তালিকায় ২০ জনের নাম-ঠিকানা দিয়ে তাদের অর্থ পাচারের তথ্য তুলে ধরা হয়। এর আগে দ্বিতীয় ধাপে গত বছরের নভেম্বরে বাংলাদেশের ব্যবসায়ী আবদুল আউয়াল মিন্টু ও তার পরিবারের সদস্যদের নামসহ ১০ জনের নাম প্রকাশ করা হয়। এ দুটি তালিকায় যাদের নাম এসেছে তাদের সম্পদের ব্যাপারেও অনুসন্ধান শুরু করবে দুদক।

প্যারাডাইস পেপারসের দ্বিতীয় তালিকায় যে ১০ বাংলাদেশির নাম এসেছিল তাদের মধ্যে বিএনপি নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টু এবং একটি প্রতিষ্ঠানের নাম ছাড়াও তার ছেলে আউয়াল-তাবিথ মো., আউয়াল-তাফসির মোহাম্মদ, চৌধুরী-ফয়সাল, মিন্টু-আবদুল আউয়াল, মোগল-ফরিদা ওয়াই, উল্লাহ-শহিদ, তাজওয়ার মো. আউয়ালের অভিভাবক হিসেবে আবদুল আউয়াল মিন্টু, আহমাদ-সামির, আউয়াল-তাজওয়ার মোহাম্মদের নাম রয়েছে। তালিকায় থাকা একমাত্র প্রতিষ্ঠানটি হল ব্রামার অ্যান্ড পার্টনার্স অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট (বাংলাদেশ) লিমিটেড। তাদের ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ৫০, মহাখালী বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা-১২১২।

অন্যদিকে প্যারাডাউস পেপারসে তৃতীয় তালিকায় নতুন করে যাদের নাম এসেছে তাদের মধ্যে মুসা বিন শমসের ছাড়া অন্যরা হলেন- ভেনাস ওভারসিস হোল্ডিংস কোম্পানি, ব্লক আই, বনানী ঢাকা। ফজলে এলাহী চৌধুরী, ডাইনামিক এনার্জি হোল্ডিং, ৪২৪ ফাস্ট ফ্লোর, রোড নং-৭, বারিধারা, ডিওএইচএস ঢাকা। কেএইচ আসাদুল ইসলাম, ইন্ট্রিপিড গ্রুপ, ধানমন্ডি ঢাকা। জুলফিকার আহমেদ, খালেদা শিপিং কোম্পানি, ১৩২ ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা, রোড নং-৩, ধানমন্ডি ঢাকা। তাজুল ইসলাম তাজুল জেক্সিমকো ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, চাষাঢ়া নারায়ণগঞ্জ। মোহাম্মদ মালেক বেঙ্গল শিপিং লাইন, ১০১ আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম। শাহনাজ হুদা রাজ্জাক, সাউদার্ন আইস শিপিং কোম্পানি, ঢাকা ইপিজেড। ইমরান রহমান, ওশান আইস শিপিং কোম্পানি, ইপিজেড ঢাকা। মোহাম্মদ এ আউয়াল, শামস শিপিং লিমিটেড, ৭৭ মাওলানা শওকত আলী রোড, লালখান চট্টগ্রাম।

এরিক জনসন আনড্রেস উইলসন, ডব্লিউ এমজি লিমিটেড, বাড়ি নম্বর ১৪, চতুর্থ তলা, রোড নং-১৩, সেক্টর-৪, উত্তরা ঢাকা। ফারহান ইয়াকুবুর রহমান. ইন্ট্রিডিপ গ্রুপ, হাউস-৫, রোর্ড নং-৫১, গুলশান ঢাকা। তাজুল ইসলাম, জেক্সিমকো ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, বালুর মাঠ, চাষাঢ়া, নারায়ণগঞ্জ। আমানুল্লাহ চাগলা, পদ্মা টেক্সটাইল, বাড়ি ৪৫৮, লেন-৮, ডিওএইচএস, বারিধারা, ঢাকা। মোহাম্মাদ আতিকুজ্জামান, নিউটেকনোলজি ইনভেস্টমেন্ট, বর্তমান অবস্থান মস্কো, রাশিয়া। মোহাম্মদ রেজাউল হক, ঠিকানা উল্লেখ নেই, বর্তমান অবস্থান মাল্টা। মোহাম্মদ কামাল ভুইয়া।

তুহিন সুমন, জেক্সিমকো ট্রেড ইন্টারন্যাশাল, বালুর মাঠ চাষাঢ়া, নারায়ণগঞ্জ। মাহতাবা রহমান, সেলকন শিপিং কোম্পানি, বাড়ি নং-৮৭এ, রোড নং-৬, পুরাতন ডিওএইচএস, বনানী, গুলশান, ঢাকা। ফারুক পালওয়ান, জেক্সিমকো ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, নারায়ণগঞ্জ এবং মাহমুদ হোসাইন, গ্লোবাল এডুকেশন সিস্টেম, বর্তমান অবস্থান আয়ারল্যান্ড।

যুগান্তর

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।