রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০২:১৭ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
ঢাকা কাস্টমস হাউজের কুরিয়ার শুল্কায়নে আবার পাচওয়ার্ড জালিয়াতি : সেসালের বস্তায় ভরে পণ্য পাচার : ভ্যাট ফাকি : কাস্টমস নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে ডিপিএক্স খাচার নিজস্ব সিএন্ডএফ ‘মিল্টন এন্টারপ্রাইজ’ নামে লাইসেন্স : ডিসির অভিযানে ডিএইচএল খাচার ৮ লাখ টাকার পণ্য জব্দ

বিশেষ সংবাদদাতা : ঢাকা কাস্টমস হাউজে আবার পাচওয়ার্ড জালিয়াতির ঘটনা শুরু হয়েছে। যেখানে ঢাকা কাস্টমস হাউজ কর্তৃপক্ষ পাচওয়ার্ড নিয়ন্ত্রণ করার কথা সেখানে ব্যবসায়ীরা পাচওয়ার্ড নিয়ন্ত্রণ করে অহরহরই পণ্য পাচার করে নিয়ে যাচ্ছে বরেল সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীরা জানান। ইতিপূর্বে পাচওয়ার্ড জালিয়াতি করে কোটি কোটি টাকার ভ্যাট ট্যাক্স ফাকি দেয়ার ঘটনায় আব্দুল হালিম নামে একজন রাজস্ব কর্মকর্তাকে ঢাকা কাস্টমস হাউজ কর্তৃপক্ষ সাসপেন্ড করে পাচওয়ার্ড নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার ৬ মাস পরেই আবার হাউজ কর্তৃপক্ষ পাচওয়ার্ড নিয়ন্ত্রণ ব্যবসায়ীদের হাতে ছেড়ে দিয়েছে। আর এই সুযোগে কতিপয় অসৎ ব্যবসায়ীরা নিজেরা পাচওয়ার্ড নিয়ন্ত্রণ করে কুরিয়ার শুল্কায়ন গেটসহ অন্যান্য গেট দিয়ে সরকারের কোটি কোটি টাকার ভ্যাট ট্যাক্স ফাকি দিয়ে প্রতিদিনই আমদানিকৃত ও মিথ্যা ঘোষণায় আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য পাচার করে নিয়ে যাচ্ছে। আর আংগুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে এককালের টোকাই খ্যাত চুনোপুটি সিএন্ডএফ ও কুরিয়ার খাচার মালিকরা। এ ক্ষেত্রে ডিপিএক্স কুরিয়ার খাচার নিজস্ব সিএন্ডএফ মিল্টন এন্টারপ্রাইজ কর্তৃক আমদানিকৃত পণ্য পাচার চ্যাম্পিয়ন বলে সবার মুখে মুখে এ কথা শোনা যায়। এর সাথে ফারদার, বম্বেনো, ডিএইচএল, ফেডেক্স, এ্যারোমেক্সসহ অন্যান্য ছোট-বড় খাচার মালিকরাও বসে নেই। সব খাচার মালিক নিজস্ব ও নিজস্ব পছন্দের সিএন্ডএফ লাইসেন্সের মাধ্যমে নামকাওয়াস্তে ট্যাক্স দিয়ে , কখনো সম্পুর্ন ট্যাক্স ফাকি দিয়ে,কখনো মিথ্যা ঘোষনায় আমদানিকৃত পণ্য দেদারচ্ছে পাচার করে নিয়ে যাচ্ছে। এ্যারোমেস্কের জাকির চুনোপুটি থেকে আঙগুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছে। একাধিক ফ্লাটসহ উত্তরার অভিজাত বিপণি বিতানে একাধিক দোকান রয়েছে তার- যা দুদক তদন্ত করলেই বের হয়ে আসবে। ডিপিএক্স খাচা ও মিল্টন এন্টারপ্রাইজের নাজির – যিনি কাস্টমস সরকারের চাকরি করতের তিনি আজ পাচওয়ার্ড জালিয়াতি পন্থায় সেসালের বস্তায় ট্যাক্সএবল পন্য ভরে দেদারচ্ছে খালাস করে আজ কোটি পতিতে পরিনত হয়েছেন। রাজধানির পল্টনে ফ্ল্টা বাড়ি, ১টি পিকআপ, ১টি নোয়া মাইক্রোবাস, ১টি প্রাইভেট কারের মালিক বনে গেছেন। এর মধ্যে কিছু সম্পদ বেনামে রয়েছে। সর্বশেষ ১ কোটি ২০ লাখ টাকা খরচ করে রাজধানির দক্ষিণখানের প্রেমবাগানে ৩ কাঠার প্লট কিনেছেন। এই নাজির প্রতিদিন তার উত্তরার অফিসে বসে পাচওয়ার্ড নিয়ন্ত্রণ ও জালিয়াতি করে সুতার বস্ত অর্থাৎ সেসালের বস্তায় ভ্যাালুয়েবল ট্যাকযোগ্য পণ্য ভরে ভ্যাট ট্যাক্স ফাকি দিয়ে ফুলহাউজ ৪/৫ ট্রলি পণ্য খালাস করে নিয়ে যাচ্ছে। গেট কন্টাক্ট থাকায় কুরিয়ার গেটে কর্তব্যরত কর্মকর্তরা কোন বাধা দিচ্ছে না। এই ডিপিএক্স খাচার বিরুদ্ধে ৬ কোটি টাকার ট্যাক্স ফাকির অভিযোগ ওঠে। পরে কাস্টমসের সাথে এক সমঝোতায় ২৫ লাখ টাকায় তা রফাদফা করা হয় বলে জনশ্রুতি শোনা যায়।
মাঝেমধ্যে ডিসি কুরিয়ার সাইদুল ইসলাম অভিযান চালিয়ে পন্য আটক করে থাকেন। আবার কখনো কখনো যুগ্ম কমিশনার মাহবুবুর রহমান কুয়িারে ঝটিকা অভিযান চালিয়ে পণ্য স্টপ ডেলিভারিসহ ২/৪ জনকে পাকড়াও করছেন। গত সপ্তাহে সেতু নামে একজন ফালতুকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গত সোমবার ডিসি কুরিয়ার এক অভিযান চালিয়ে ১৪ লাখ টাকার ট্যাকযোগ্য পণ্য ৮ লাখ টাকা ফাকি দিয়ে ডিএইচএল পার করার সময় হাতেনাতে ধরে ফেলেন। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ডিসি কুরিয়ার সাইদুল ইসলাম জানান, ডিএই্চএল ৮ লাখ টাকার ট্যাক্স ফাকি দিয়ে পন্য পাচারের সময় তা জব্দ করা হয়েছে। ডিসি সাইদুল ইসলাম আরো জানান, কুরিয়ার খাচার মালিকরা নিজস্ব কোন সিএন্ডএফ লাইসেন্স করতে পারে না। কাস্টমস আইন তা পারমিট করে না। তাহলে ডিপিএক্স খাচা কিভাবে মিল্টন এন্টারপ্রাইজ নামে সিএন্ডএফ লাইসেন্স করলো-এ প্রশ্নের উত্তরে ডিসি সাইদুল ইসলাম জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
৮ লাখ টাকার ট্যাক্স ফাকির ঘটনায় জড়িত একজন মহিলা সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তাকে সাসপেন্ড করার প্রক্রিয়া চলছে বলে সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীরা জানান।
ডিসি একটি ঘটনা ফাইন্ডআউট করেছেন কিন্ত এই প্রক্রিয়ায় প্রতিদিনই শত শত ঘটনায় পণ্য পাচার হয়ে যাচ্ছে।
সূত্র জানায়, পাচওয়ার্ড জালিয়াতির করে ভ্যাট ট্যাক্স ফাকি দিয়ে পণ্য পাচারের গডফাদারার ইদ উপলক্ষে সিংগাপুরে মার্কেটিং করতে গেছেন।
সূত্র জানায়, শুধু পাচওয়ার্ড জালিয়াতিই নয়- সংশ্লিষ্ট কুরিয়ার খাচার নিয়ন্ত্রিত সিএন্ডএফ এজেন্ট কর্নধাররা নিজেরা তাদের অফিসে বসে কাস্টমস অফিসসারদের নামের সীল মেরে নিজেরাই সই করে সই পেপার সো করে গেট কন্টাক্টে পণ্য পার করে নিয়ে যাচ্ছে। এর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে র‌্যাব-১ ইতিপূর্বে অভিযান চালিয়ে কয়েকজনকে গ্রেফতারও করেছিল র‌্যাব। কতিপয় কাস্টমস কর্মকর্তার নামের সীলও উদ্ধার করে র‌্যাব সদস্যরা। এ ঘটনায় সিএন্ডএফ এজেন্ট জসিম তপাদারসহ কয়েকজনকে জড়িত করে বিমানবন্দর থানায় মামলাও হয়। কিন্ত এরপরও এ ঘটনা থেমে নেই।
সূত্র জানায়, ১ নং ডেলিভারি গেট দিয়ে ট্যাক্স ফাকি দিয়ে বা এক ট্যাক্সে পেপার সো করে একাধিক পণ্য নেয়ার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। মিথ্যা ঘোষণায়ও পন্য পাচারের ঘটনা ইতিপূর্বে কাস্টমস উৎঘাটন করেছে। শুল্ক গোয়েন্দারা এক কনসালমেন্টে ১৬ লাখ টাকার ট্যাক্সও আদায় করেছেন- যা ট্যাক্স না দিয়ে পাচার করার প্রক্রিয়া করা হয়। তবে বর্তমান ডিসি এয়ারফ্রেইট সাড়াশি অভিযান চালানোর ফলে এ প্রবনতা কমে এসেছে।

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।