মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০৪:১২ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
বাংলাদেশ ব্যাংকে স্বর্ণ জমার ৬ ডিএম ভুয়া : তদন্ত প্রতিবেদনে চান্চল্যকর তথ্য : সাবেক গুদাম কর্মকর্তা হারুনের বিরুদ্ধে মেমরিকার্ড জালিয়াতির অভিযোগ তদন্ত হচ্ছে

একুশে বার্তা ডেক্স : ঢাকা কাস্টম হাউসের আলোচিত স্বর্ণ গায়েবের ঘটনার তদন্তে বেরিয়ে এসেছে আরও ভয়াবহ তথ্য। বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেওয়ার নথিতে সিল থাকলেও কোনো কর্মকর্তার স্বাক্ষর নেই। প্রাথমিক তদন্তে এমন প্রমাণ পেয়েছে ঢাকা কাস্টম হাউসের গঠিত তদন্ত কমিটি। বিভিন্ন সময়ে ৬টি ডিটেনশন মেমোর (ডিএম) বিপরীতে ভিজিআর রেজিস্টারে স্বর্ণ বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রেরণ সংক্রান্ত সিল থাকলেও আসলে এসব স্বর্ণ জমা দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া সর্বশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত গুদাম কর্মকর্তা এসব অনিয়ম করেছেন কি না, তা পুলিশের ফরেনসিকের মাধ্যমে উদ্ঘাটন করা যেতে পারে বলেও মনে করে কমিটি। এ ছাড়া ঢাকা কাস্টম হাউসের গুদামের ইনভেন্ট্রির মাধ্যমে আরও ৬ কেজি স্বর্ণ বেশি গায়েবের প্রমাণ পাওয়া গেছে। অর্থাৎ গুদাম থেকে ৬০ দশমিক ৭১৮ কেজি স্বর্ণ গায়েব হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এ দিকে সাবেক গুদাম কর্মকর্তা হারুনর রশিদের বিরুদ্ধেও মেমরিকার্ড জালিয়াতির ঘটনা তদন্ত হচ্ছে।এই হারুন এখন জনপ্রতিনিধি সাজার পায়তারা করছেন। তিনি গত মেতে জিসিসিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে জামানত খুইয়েছেন।

ঢাকা কাস্টম হাউসের স্বর্ণ গায়েবের ঘটনায় সারা দেশে তুমুল সমালোচনা হয়। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সংসদ পর্যন্ত এ নিয়ে আলোচনা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা কাস্টম হাউস একটি তদন্ত কমিটি ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আরেকটি কমিটি গঠন করে। ১৫ দিনের মধ্যে দুই কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন এনবিআরের কাছে জমা দেওয়ার কথা। কিন্তু ঘটনার প্রায় আড়াই মাসের মাথায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে ঢাকা কাস্টম হাউসের করা কমিটি; কিন্তু কমিটির সদস্য বিভিন্ন সময়ে বিদেশে থাকার কারণে এনবিআরের গঠিত কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন এখনো জমা দেয়নি।

এ বিষয়ে  ঢাকা কাস্টম হাউস গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার কাজী ফরিদ উদ্দিন গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে  অপারগতা প্রকাশ করেন।

এনবিআর সূত্র জানায়, তদন্ত কমিটি ইনভেন্ট্রিসহ যাবতীয় তথ্য পর্যালোচনা করে ৬০ দশমিক ৭১৮ কেজি স্বর্ণ গায়েবের তথ্য পেয়েছে। মোট ৪৭৪টি ডিএমের বিপরীতে এসব স্বর্ণ গায়েব হয়েছে। এর আগে ৫৫ কেজি স্বর্ণ গায়েবের তথ্য দিয়ে বিমানবন্দর থানায় মামলা করে ঢাকা কাস্টম হাউস কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া ৬ ডিএমের বিপরীতে ব্যংকে জমা না দিয়ে স্বর্ণ গায়েবেদের ঘটনার প্রকৃত দায়ীদের চিহ্নিত করতে পুলিশের ফরেনসিকের সহায়তা নেওয়ার বিষয়ে মতামত দিয়েছে কমিটি। প্রাথমিক তদন্তে বিদেশি কারেন্সির কোনো ঘাটতি নেই বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। তবে এনবিআরের গুদাম ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কিছু সাংঘর্ষিক আদেশ পেয়েছে কমিটি। প্রতিবেদনে ঢাকা কাস্টম হাউস কর্তৃপক্ষ মূল্যবান গুদামের জন্য নিলাম শাখার সহকারী বা ডেপুটি কমিশনারকে নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা, রাজস্ব কর্মকর্তাকে (প্রিভেন্টিভ) ট্রানজিট গুদামের তত্ত্বাবধানকারী কর্মকর্তা এবং ট্রানজিট গুদামের পদস্থ সিপাইকে তল্লাশিকারী কর্মচারী হিসেবে আদেশ করেছে।

তবে এই আদেশকে এনবিআরের জারি করা গুদাম ব্যবস্থাপনার স্থায়ী আদেশের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলেও মনে করে তদন্ত কমিটি। কারণ একজন অতিরিক্ত কমিশনারকে নিয়ন্ত্রণকারী না করে উপকমিশনারকে করা হয়েছে। যদিও এনবিআরের স্থায়ী আদেশে কোন কর্মকর্তাকে কী দায়িত্ব দিতে হবে, তা সুস্পষ্ট বলা আছে। এ ছাড়া আরও বেশ কিছু সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। এতে বলা হয়েছে, গুদামে সিসি ক্যামেরা স্থাপন থেকে শুরু করে জনবল বাড়াতে হবে। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করে ২০২৩ সাল পর্যন্ত স্থায়ী ও অস্থায়ী খাতে ১ হাজার ২৭২ কেজি স্বর্ণ ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়েছে। আর যেসব ডিএমের বিপরীতে বিশাল পরিমাণে স্বর্ণ বাংলাদেশ ব্যাকে জমা দেওয়ার কথা বলে সেগুলো গায়েব করা হয়েছে। এক্ষেত্রে বাজুসের প্রতিনিধি চেয়েও পাওয়া যায়নি।

সাবেক গুদাম কর্মকর্তা হারুনর রশিদের বিরুদ্ধেও মেমরিকার্ড জারিয়াতির ঘটনা তদন্ত হচ্ছে। এ নিয়ে একটি টিভি মিডিয়ায় খবর বেরিয়েছে। হারুনর রশিদের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি

 

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।