রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৯:৫০ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
শাহজালালে স্বর্ণ পাচারের বডি ফিটিং সিএএবির নিরাপত্তারক্ষী মেজবাউদ্দিন শেখ এখন অনেক প্রভাবশালী : আরো অর্ধশত নিরাপত্তারক্ষী পাচারে জড়িত!

ডেক্স রিপোর্ট : হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এখন স্বর্ণ পাচারের নিরাপদ রুট। আর এই সুযোগটা কাজে লাগায় বিমানবন্দরে কর্মরত সিভিল এভিয়েশনের নিরাপত্তা শাখার বেশ কিছু অসাধু কর্মচারীরা।এরা দীর্ঘদিন শাহজালাল বিমানবন্দরে কর্মরত থাকলেও তাদের বদলি করে না সিএএবির সংশ্লিষ্ট শাখা।  বরং এদের থেকে সুবিধা নিয়ে চুপসে যায়। ওরা সোনাসহ ধরা পড়ে, বদনাম হয় সিভিল এভিয়েশনের, বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়। ওরা কেউ কেউ এতোই প্রভাবশালী যে, ওরা এমপি,মন্ত্রী বানায়, নির্বাচনে খরচ দেয়, ভিআইপি প্রটোকল করে। এদের মধ্যে কেউ কেউ সম্পদের পাহাড় বানিয়েছে, চাকরি ছেঢ়ে গেছে, আবার কেউ কেউ ঘাপটি মেরে আছে।নিরাপত্তা সুপার ফজলুল করিম চৌধুরির এদের মধ্যে অন্যতম। তার অন্যতম সহযোগি চাকরি ছেড়ে চলে গেছে।

সম্প্রতি নিরাপত্তা শাখার বেশ কয়েক জন স্বর্ণসহ গ্রেফতার হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ব্যাপক তথ্য পেয়েছে পুলিশ। পুলিশের পাওয়া তথ্যমতে, স্বর্ণ পাচার কাজে সরাসরি জড়িত রয়েছে প্রায় অর্ধশত নিরাপত্তা কর্মচারী। এদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা রিপোর্ট, গোয়েন্দা নজরদারি, গোয়েন্দারা বার বার খতিয়ে দেখে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে প্রতিবেদন দিলেও তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।সিএএবির নিরাপত্তারক্ষী যারা দীর্ঘদিন যাবত শাহজালাল বিমানবন্দরে কর্মরত এবং পাচারসহ বিভিন্ন অনৈতিক কাজে জড়িত, যারা জিয়া বিমানবন্দরের নামে এখনও স্ট্রীকার লাগায় সেই- বারি মোল্লা, মাসুদ, মেজবাহ, মোতালেব ,ফরিদ, কাউসার, আশরাফ, আলমগীর ,ইউসুফ, বিমানের সুমন ওরফে খাটো সুমন, সিএএবির নিরাপত্তা বিভাগের  দুই ভাই মহসীন-হাবীব তালুকদার, বিমানের হেলপার শাজাহান-আনোয়ার, সিএএবির মিজানুর রহমান খান নয়ন, ম্যানপাওয়ারের মহিউদ্দিন এখনও ধরাছোয়ার বাইরে। এদের মধ্যে শেখ মেজবাহ উদ্দিন খুব প্রভাবশালি।

বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, মেজবাউদ্দিন শেখ স.নি. প্রহরী পিতা-আবুল কাশেম শেখ ‘সি’ শিফটে ডিউটি করে  (ভিআইপি করিডোরে) এখান থেকেই সে নিয়ন্ত্রণ করে স্বর্ণ পাচারের কাজ। তার সাথে স্বর্ণ চোরাকারবারীদের রয়েছে সু-সম্পর্ক। চোরাকারবারীরা বিমান থেকে নেমে মেজবাউদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করে। মেজবাউদ্দিন দ্রুত চোরাকারবারীর সাথে যোগাযোগ করে এবং কৌশলে চোরাকারবারীদের কাছে থাকা স্বর্ণের বারগুলো মেজবাউদ্দিন ও তার লোকজন নিয়ে নেয়। এরপর তারা সুযোগ মতো বাইরে বের হয়ে যায় এবং স্বর্ণের বারগুলো বিমানবন্দরের বাইরে থাকা ঐ চোরাকারবারীর রিসিভারের কাছে দিয়ে আসে। এই কাজের মেজবাউদ্দিনের সাথে জড়িত আছে লালচুল লালদাড়ি স.নি. প্রহরী মোতালেব খান। তারা ডিউটি চলাকালীন সময় এসব কাজ করে থাকে। প্রতি ট্রিপে তারা স্বর্ণ পাচার বাবদ প্রতিটি স্বর্ণ বারে ২০ হাজার টাকা করে  পেয়ে থাকে। গোয়েন্দা এদের গতিবিধি নজরদারি করছে।

মেজবউদ্দিন শেখ শাহজালাল বিমানবন্দরে প্রায় তিনযুগ কর্মরত থাকলেও তাকে অন্যত্র বদলি করা হয় না।

স্বর্নসহ সিএএবির নিরাপত্তা রক্ষী রেজাউল গ্রেফতার হওয়ার পর মেজবাহ আড়ালে চলে যায়। বিমানবন্দর থানা পুলিশ তাকে তলব করলেও বিশেষ জেলার লোক বিধায় পার পেয়ে যায়।

তাদের ডিউটি চলাকালিন সময় ৪ থেকে ৫ জন চোরাকারবারীর স্বর্ণ বহন করে পাচার করে থাকে।
সূত্রে আরো জানা যায়, মেজবাউদ্দিন ভিআইপি প্রটৌকল করে, যার কারণে তাকে কেউ সন্দেহ করতে পারে না বা কেউ তাকে জিজ্ঞাসা বা চ্যালেঞ্জ করে না। কারণ তার বাড়ী প্রধানমন্ত্রীর এলাকায়। এই প্রভাব খাটিয়ে থাকে মেজবাউদ্দিন শেখ। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে। প্রধানমন্ত্রীর এলাকার লোক হিসাবে তাকে বিশেষ প্রাধান্য দেয়া হয়। এই সুযোগটা সে কাজে লাগিয়ে স্বর্ণ পাচারসহ অনৈতিক কর্মকান্ড করে যাচ্ছে। কেউ তার টিকিটিও ছুঁতে পারছে না।

এদিকে ভিআইপি প্রটৌকলের নামে মেজবাউদ্দিন দেদারছে স্বর্ণ পাচার করে যাচ্ছে। বিমানবন্দরে কর্মরত বেশ কয়েক জন নিরাপত্তা কর্মী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানালেন যে, স,নি,প্রহরী মেজবাউদ্দিন শেখ বলে, আমার সামনে কেউ আসবি না, আসলে খবর আছে। আর মুখ খুললে পালাবার সুযোগ পাবি না। আমি মেজবাউদ্দিন বলছি। তবে বিশেষ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত স্বর্ণ পাচার করে মেজবাউদ্দিন শেখ এখন শত কোটি টাকার মালিক। ঢাকায় বিলাশবহুল ফ্ল্যাট ও দুটি বাড়ি রয়েছে। দুদক তদন্ত করলে সঠিক তথ্য বেরিয়ে আসবে।

মেজবাউদ্দিন শেখ-এর এসব অনৈতিক কর্মকান্ডের বিষয় জানতে চাইলে পরিচালক শাহজালাল বলেন, আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানি না, তবে বিষয়টি দেখব। এভিয়েশন সিকিউরিটি ফোর্সের (এভসেক) পরিচালক নিরাপত্তা বলেন, বিষয়টি আমরা দেখব।

এ ব্যাপারে সিএএবির নিরাপত্তারক্ষী মেজবাউদ্দিন জানান, আমার বিরুদ্ধে যারা লিখেছে তাদের বিচার করবে আল্লাহ, হেদায়েত করবে আল্লাহ, আমি স্বর্ন পাচারের সাথে জড়িত না।

 

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।