শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৪:১০ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
সরকারি খরচে বিদেশ ভ্রমণ : ‘নেশা’ তাদের পিছু ছাড়ে না: বিমান বহরে ৭৯ জন, সিএএবির ৫ জন, মাউশির ২৩৯ জন, মৎস্য চাষে ১০০ জন, নগর উন্নয়নে, পরিসংখ্যানের সিপিএস প্রশিক্ষণে বিদেশ যেতে বিশাল অংকের বরাদ্দ চেয়ে পরিকল্পনা কমিশনে দাপ্তরিক চিঠি চালান

একুশে বার্তা রিপোর্ট : ডলার সংকটে ডলার সাশ্রয়ে সরকারি খরচে বিদেশ ভ্রমণে বার বার নিষেধাঙ্ঘা জারি করার পরও বিদেশ ভ্রমণ ওদের নেশা হয়ে দাড়িয়েছে, ‘বিদেশ ভ্রমণ তাদের নেশা ছাড়ে না’। ২০ কোটি টাকা সরকারি খরচে বিমানের ৭৯ জনের বহর যাচ্ছে জাপানের নারিতায়। সিভিল এভিয়েশনের ৫ জনের সদস্য যাচ্ছে তুরস্কসহ অন্য ৩ দেশে, খরচ ৪০ লাখ টাকা, অবশ্য এ খরচ নাকি দেবে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাউশির ২ হাজার ৭৫৯ জনের প্রশিক্ষণের জন্য ২৩৯ কোটি, গৃহায়ন মন্ত্রণালয়ের নগর উন্নয়নের একটি প্রকল্পের প্রশিক্ষনের জন্য ৫ কোটি টাকা, মৎস্য ও পাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ১০০ কর্মকর্তার মৎস্য চাষে জন্য ৭ কোটি টাকা, পরিসংখ্যান ব্যুরোর সিপিএস প্রকল্পের ৮ জনের প্রশিক্ষণের জন্য ১৪ কোটি টাকার ওপরে বরাদ্দ চেয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে দাপ্তরিক চিঠি পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে সিভিল এভিয়েশন টিম ৭ সেপ্টেম্বর এবং বিমান বহর ১ সেপ্টেম্বর বিদেশ যাবে। অন্যরা টাকা বরাদ্দ পেলে বিদেশ ভ্রমণে যাবে।

এ নিয়ে আজকের পত্রিকা এবং প্রতিদিনের বাংলাদেশ ২৭ আগস্ট প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে-

বিদেশ ঘোরারনেশাতাদের ছাড়ে না

ডেক্স রিপোর্ট : বৈশ্বিক মন্দায় দেশের চলমান অর্থনৈতিক সংকটে ডলারের ওপর চাপ কমাতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদেশসফরের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু এরপরও থেমে নেই নানান অছিলায় সরকারি টাকায় বিদেশভ্রমণের চেষ্টা। যার অন্যতম একটি কৌশলের নাম হচ্ছে ‘প্রশিক্ষণ’। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রশিক্ষণের নামে তাদের কর্মকর্তাদের বিদেশ পাঠানোর খরচাপাতি চেয়ে পরিকল্পনা কমিশনে একের পর এক প্রস্তাব পাঠিয়েই চলেছে। সাম্প্রতিককালে এ রকম চারটি প্রস্তাবের বিষয়ে প্রশ্ন তুলে কমিশন কোনোটির ব্যয় আরও কমাতে, আবার কোনোটি একবারেই বাদ দিতে বলেছে।

জানা যায়, পরিকল্পনা কমিশনে সম্প্রতি প্রস্তাব করা হয় মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) বিভাগের ‘লার্নিং এক্সিলারেশন ইন সেকেন্ডারি এডুকেশন’ প্রকল্পটি। এতে ২ হাজার ৭৫৯ জন শিক্ষক-কর্মকর্তার দক্ষতা উন্নয়নে বিদেশে প্রশিক্ষণে পাঠানোর জন্য ২৩৯ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়। তারা পাঁচ থেকে সাত দিনের জন্য বিদেশ প্রশিক্ষণে যাবেন। জনপ্রতি খরচ ধরা হয়েছে ৮ লাখ ৬৬ হাজার টাকা।

অন্যদিকে নগরের অবকাঠামো উন্নয়নের একটি প্রকল্পে বিদেশভ্রমণের জন্য চাওয়া হয়েছে ৫ কোটি টাকা। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের মত হচ্ছেÑ সড়ক, ব্রিজ বা কালভার্ট নির্মাণ ইত্যাদি হচ্ছে এলজিইডির নিয়মিত কাজ। এ কাজের অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য বৈদেশিক প্রশিক্ষণের প্রয়োজন নেই। তাই প্রকল্প থেকে প্রশিক্ষণপর্ব বাদ দিতে বলেছে কমিশন।

আবার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘বিদ্যমান সরকারি মৎস্য খামার ও বাঁওড়সমূহের সক্ষমতা ও মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্পে মৎস্য চাষ শিখতে বিদেশ যেতে চান ১০০ কর্মকর্তা। এর জন্য মোট ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ৭ কোটি টাকা। প্রত্যেকের পেছনে ব্যয় হবে ৭ লাখ টাকা করে। প্রতি ব্যাচে ১০ জন করে মোট ১০টি ব্যাচে এই বৈদেশিক প্রশিক্ষণ বা শিক্ষাসফরের ব্যবস্থা করা হবে।

তা ছাড়া বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) দেশে সুশাসনের অবস্থা জানতে ‘সিটিজেন পারসেপশন সার্ভে (সিপিএস)’ প্রকল্প প্রস্তাবে আটজনের বিদেশ প্রশিক্ষণের জন্য বরাদ্দ চেয়েছে। তবে প্রকল্প থেকে এই বিদেশসফর বাদ দিতে বলেছে কমিশন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, অতীতে নতুন কেনা বিমানের ডেলিভারি উপলক্ষে, পুকুর খনন শিখতে, লিফট কিনতে এবং প্রতিযোগী ছাড়াই পুরস্কার আনতে সরকারি খরচে বিদেশসফরের মতো ঘটনাগুলোর পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে বারবারই পরিকল্পনা কমিশন থেকে অসঙ্গতিপূর্ণ প্রস্তাবগুলো ফেরত পাঠানো হচ্ছে। তারপরও ‘অস্বাভাবিক’ ও ব্যয়বহুল বিদেশসফরের প্রস্তাব জমা দেওয়ার প্রবণতা থেমে নেই। এ বিষয়ে বিশিষ্টজনরা ঢালাওভাবে বিদেশসফর বাদ দিয়ে বরং বিদেশ থেকে প্রশিক্ষক আনিয়ে দেশেই প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজনের মাধ্যমে ব্যয় সাশ্রয়ী পরিকল্পনা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

যা আছে মাউশির প্রকল্পে  : মাধ্যমিক শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার্থী ধরে রাখার হার বাড়ানো, শিখন ত্বরান্বিত করাসহ শিক্ষকদের দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে ৩ হাজার ২৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘লার্নিং এক্সিলারেশন ইন সেকেন্ডারি এডুকেশন’ প্রকল্প হাতে নিয়েছে মাউশি। প্রকল্পটিতে ২ হাজার ৭৫৯ জনকে বৈদেশিক প্রশিক্ষণ দিতে ২৩৯ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। জনপ্রতি ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন।

সম্প্রতি প্রকল্পটি নিয়ে পরিকল্পনা কমিশনে মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন কমিশনের আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য, সিনিয়র সচিব মোছাম্মৎ নাসিমা বেগম। সভায় প্রকল্পটির বৈদেশিক প্রশিক্ষণ খাতে এত ব্যয়ের প্রস্তাব নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়।

সভায় বলা হয়, প্রকল্প থেকে ট্রেনিং অন অ্যাসেসমেন্ট ও প্রভাব বিশ্লেষণ বা মূল্যায়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করার প্রস্তাবটি বাদ দিতে হবে। পক্ষান্তরে মধ্যবর্তী মূল্যায়ন বিষয়টি সম্পাদনের বিস্তারিত কৌশল ও রূপরেখা উল্লেখ এবং প্রতি ব্যাচে একজন করে বৈদেশিক প্রশিক্ষণের জন্য সুযোগ রেখে প্রস্তাব পুনর্গঠন ও ব্যয় প্রাক্কলন সংশোধন করতে হবে। সেই সঙ্গে কী ধরনের বৈদেশিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, তার সুস্পষ্ট বিবরণ ও যৌক্তিকতা উল্লেখ করতে হবে।

প্রকল্পটিতে বৈদেশিক প্রশিক্ষণে বিশাল ব্যয় ধরার বিষয়ে জানতে চাইলে পরিকল্পনা কমিশনের অর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের শিক্ষা উইংয়ের যুগ্ম সচিব রাহনুমা নাহিদ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমরা পিইসি সভায় বৈদেশিক প্রশিক্ষণ খাতে ব্যয় কমাতে বলেছি। যে ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে, সেটা থাকবে না। প্রকল্পটিতে এত বৈদেশিক প্রশিক্ষণের প্রয়োজন নেই।’

বৈদেশিক প্রশিক্ষণে এত বেশিসংখ্যক শিক্ষক-কর্মকর্তাকে কেন রাখা হয়েছে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পরিকল্পনা) ড. একিউএম শফিউল আজম বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কথা বলতে পারব না।’ তিনি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের (পরিকল্পনা) সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।

এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) আব্দুল মতিন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমরা যেভাবে প্রস্তাব দিই সেভাবেই অনুমোদন হয় না। অনুমোদনের দায়িত্বে থাকা অথরটি যাচাই-বাছাই করে কমিয়ে দেয়। এ বিষয়ে পিইসি সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। তার আলোকেই প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে।’

বৈদেশিক প্রশিক্ষণে কারা যাবে এবং কতজন যাবে, সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আগে ২ হাজার ৭৫৯ জন যাওয়ার কথা ছিল। তবে পিইসি সভায় প্রতি ব্যাচ থেকে একজন নিতে বলায় এখন তা কমে যাবে। প্রায় ১ হাজার ৭০০ জন শিক্ষক-কর্মকর্তা যাবেন বিদেশ প্রশিক্ষণে। তারা বিদেশে পাঁচ থেকে সাত দিনের ট্রেনিং নেবেন। তবে কোন কোন দেশে যাবেন, তা এখনও ঠিক হয়নি।’

তবে জানা গেছে, শিক্ষকদের দক্ষতা উন্নয়নের এই প্রকল্পে বিদেশ প্রশিক্ষণে জন্য শিক্ষকদের সংখ্যা কমানো হলেও কমেনি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সংখ্যা। এ ধরনের বৈদেশিক প্রশিক্ষণ কতটা কাজে লাগে, এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষার একটি প্রকল্প থেকে মালয়েশিয়া ও ভিয়েতনামে প্রশিক্ষণ নিয়ে আসা এক শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তারা জানান, সেখানে গিয়ে তারা দুই-তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখেছেন। তারা শিক্ষাপদ্ধতি ও পরিবেশ কেমন সেটা দেখেছেন।

তবে এ ধরনের প্রকল্পে বিদেশে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন আছে কি না, জানতে চাইলে ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আবদুল মান্নান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমাদের শিক্ষকদের অবশ্যই ভালো প্রশিক্ষণের প্রয়োজন আছে। কারণ প্রতিনিয়তই পরিবর্তন আসছে। তবে বিদেশে নিয়ে গিয়ে প্রশিক্ষণ না দিয়ে বিদেশ থেকে ভালো প্রশিক্ষক এনে দেশেই প্রশিক্ষণ দিতে পারলে ভালো। তাহলে দেশের টাকা সাশ্রয় হবে, শিক্ষকরাও ভালোভাবে শিখতে পারবেন। অনেক সময় দেখা যায়, যে উদ্দেশ্যে বিদেশে প্রশিক্ষণে নিয়ে যাওয়া হয় সেটাই তারা শিখতে পারেন না।’

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এ বিষয়ে প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘দক্ষতা উন্নয়নের জন্য এত শিক্ষকের বিদেশে প্রশিক্ষণের কোনো প্রয়োজনীয়তা আছে বলে আমার মনে হয় না। এ ছাড়া সরকার যখন বিদেশে প্রশিক্ষণ বন্ধ রেখে অর্থ সাশ্রয় করতে চাচ্ছে, সেখানে হাজার হাজার শিক্ষক-কর্মকর্তার বিদেশে প্রশিক্ষণ নেওয়ার কতটা যৌক্তিকতা আছে, সেটি ভেবে দেখা দরকার।’

এদিকে লার্নিং এক্সিলারেশন প্রকল্পে ৪ লাখ ৫১ হাজার শিক্ষক ও কর্মকর্তার দেশীয় প্রশিক্ষণের জন্য রাখা হয়েছে ২ হাজার ৭৪ কোটি টাকা। এখানে একজনের প্রশিক্ষণে ব্যয় হবে ৪৬ হাজার টাকা। স্থানীয় প্রশিক্ষণ খাতে বিষয়ভিত্তিক প্রফেশনাল ডেভেলপমেন্ট ট্রেনিং, নবীন শিক্ষকদের জন্য বেসিক ট্রেনিং, প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের জন্য লিডারশিপ ট্রেনিং, আইসিটি শিক্ষকদের জন্য আইটিবিষয়ক অ্যাডভান্সড ট্রেনিং, ট্রেনিং অন অ্যাসেসমেন্ট, লাইফ স্কিলস বেইজড ট্রেনিং, শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ে শিক্ষকদের ট্রেনিং, ব্লেন্ডেড লার্নিংবিষয়ক ট্রেনিং দেওয়া হবে।

জানা গেছে, প্রকল্পটির মোট ব্যয় ৩ হাজার ২৬৮ কোটি টাকার মধ্যে বিশ্ব ব্যাংক দেবে ৩০০ মিলিয়ন বা ৩ হাজার ২১০ কোটি টাকা আর সরকারের তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে ৫৮ কোটি টাকা। প্রকল্পটির মেয়াদকাল জুলাই ২০২৩ থেকে জুন ২০২৮। অনুমোদন পেলে যা বাস্তবায়ন করবে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

প্রকল্পের মূল কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে, টিচিং এবং লার্নিং ম্যাটেরিয়ালস ক্রয়, বই ও সাময়িকী ক্রয়, সেমিনার, ওয়ার্কশপ এবং মাল্টিমিডিয়া রুমের জন্য কম্পিউটার ও আনুষঙ্গিক ক্রয়।

রাস্তা, মার্কেট বানানো শিখতেও বিদেশ যেতে চান তারা: নগরের অবকাঠামো উন্নয়নে ৫ হাজার ৯৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে নগর ও আঞ্চলিক উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। প্রকল্পটির আওতায় সড়ক, ব্রিজ বা কালভার্ট, ফুটপাথ, ড্রেন, বাস টার্মিনাল, পার্ক ও মার্কেট নির্মাণ এবং সড়কবাতি স্থাপন করা হবে। এ ধরনের কাজ শিখতে প্রকল্পটির আওতায় বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া পরামর্শক খাতে চাওয়া হয়েছে ৩১৬ কোটি টাকা। পরিকল্পনা কমিশন এ প্রস্তাবটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

কমিশন বলছে, সড়ক, ব্রিজ বা কালভার্ট, ফুটপাথ, ডেন নির্মাণ, স্ট্রিট লাইট স্থাপন, পার্ক নির্মাণÑ ইত্যাদি এলজিইডির নিয়মিত কাজ। এ কাজের অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য বৈদেশিক প্রশিক্ষণের প্রয়োজন নেই। তাই প্রকল্প থেকে এই প্রশিক্ষণপর্ব বাদ দিতে বলা হয়েছে।

প্রকল্পটিতে পরামর্শক খাতে ৩১৬ কোটি টাকা চাওয়ার বিষয়েও পরিকল্পনা কমিশন একই অবস্থান নিয়েছে। কমিশন বলছে, পরামর্শক খাতে প্রায় ৩১৬ কোটি ৯১ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছেÑ যা মোট প্রকল্প ব্যয়ের ৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এগুলো এলজিইডির কাজ, তাই কমিশন বিদেশি ও দেশি পরামর্শক নিয়োগের প্রস্তাবের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। অতিপ্রয়োজনীয় পরামর্শক প্রস্তাব করে এ খাতে ব্যয় যথাযথভাবে কমাতেও বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে। প্রকল্পটিতে অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ বাবদ প্রায় ২০ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব প্রশিক্ষণ কাদের দেওয়া হবে এবং আদৌ তার প্রয়োজন আছে কি না, তা জানতে চেয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।

প্রকল্পে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় প্রস্তাবের বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) এমদাদ উল্লাহ মিয়ান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমরা একজন যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করে দিয়েছি। প্রকল্পটিতে বিদেশ প্রশিক্ষণ কিংবা পরামর্শক লাগবে কি না, তা যাচাই-বাছাই করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। লাগলে কতজন লাগবে, তা-ও যাচাই করে দেখা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ৮৫টি পৌরসভায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। পৌরসভা ও এলজিইডির সমন্বয়ে কাজটি হবে। পৌরসভাগুলোর এখনও সেই ধরনের অভিজ্ঞতা হয়নি। তাই পরামর্শকের কিছুটা প্রয়োজন রয়েছে।

এ প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, সহনশীল নগর পরিষেবাসমূহের পরিবৃদ্ধি এবং নির্বাচিত অর্থনৈতিক করিডোরে আঞ্চলিক পর্যায়ে বিনিয়োগের সুবিধাসমূহ বিস্তৃত করা এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য। তারই আলোকে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে মোট ৫ হাজার ৯৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি জুলাই ২০২৩ থেকে জুন ২০২৯ মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটিতে ৪ হাজার ২৫৯ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে দেবে বিশ্বব্যাংক। বাকি ১ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা দেবে সরকার।

এ প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমগুলো হচ্ছেÑ ৩ হাজার ৭৪৬টি সম্পদ সংগ্রহ, ৮৫০ কিলোমিটার নগর সড়ক উন্নয়ন, ৪৪৫ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ, দুই হাজার মিটার ব্রিজ কালভার্ট নির্মাণ, ২০০ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণ, ৫৯৫ কিলোমিটার স্ট্রিট লাইট স্থাপন, ১০টি বাস টার্মিনাল নির্মাণ, ১০টি কিচেন মার্কেট নির্মাণ, ১০টি পৌর সুপার মার্কেট নির্মাণ, ১০টি কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ, ৮ হাজার ৫০০ মিটার রোড প্রটেকটিভ ওয়ার্কস বা রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ, ৮৫টি পাবলিক টয়লেট নির্মাণ, একটি মিউনিসিপাল বিল্ডিং নির্মাণ, ১০টি পার্ক বা পাবলিক প্লেস উন্নয়ন, ৭৫টি ইউএলবি পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ। এ ছাড়া ৬০ কোটি টাকা রাখা হয়েছে ভূমি অধিগ্রহণে।

১০০ কর্মকর্তা শিখতে চান মাছ চাষ :মৎস্য চাষ শিখতে বিদেশ যেতে চান ১০০ কর্মকর্তা। এর জন্য ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ৭ কোটি টাকা। প্রত্যেকের পেছনে ব্যয় হবে ৭ লাখ টাকা করে। প্রতি ব্যাচে ১০ জন করে মোট ১০টি ব্যাচে এই বৈদেশিক প্রশিক্ষণ বা শিক্ষাসফরের ব্যবস্থা করা হবে। সেই সঙ্গে আছে মোটা অঙ্কের পরামর্শক ব্যয়। ‘বিদ্যমান সরকারি মৎস্য খামার ও বাঁওড়সমূহের সক্ষমতা ও মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পে এমন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ৪০৮ কোটি ১২ লাখ টাকা।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবটি নিয়ে গত ১৩ আগস্ট অনুষ্ঠিত হয় পিইসি (প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি) সভা। ওই সভায় বিদেশসফরের বিষয়ে প্রশ্ন তোলা হলেও শেষ পর্যন্ত সে সুযোগ বহাল রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য একেএম ফজলুল হক বলেন, ‘সভায় বিষয়টি আলোচনা হয়েছে। তবে বিদেশসফর তো আর এখনই হচ্ছে না। প্রকল্পটি কয়েক বছর ধরে বাস্তবায়িত হবে। ভিয়েতনাম কীভাবে স্বল্প খরচে হ্যাচারি শিল্প স্থাপন করে লাভবান হয়েছে, সেটি সরাসরি দেখলে আমাদের দেশের লাভ হবে। আমরা বৈদেশিক প্রশিক্ষণের সুযোগ রাখতেই এ প্রস্তাবটি বাদ দিইনি।’

পিইসি সভা সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে পরামর্শকের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। অডিও এবং ভিডিও তৈরির জন্য চাওয়া হয়েছে ৫০ লাখ টাকা। অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ খাতে প্রতি ব্যাচে ২০ জন করে মোট ৫ হাজার ৪৪০ জনের জন্য চাওয়া হয়েছে ১৫ কোটি ৩ লাখ টাকা। এ ছাড়া ভ্রমণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। বদলি ভ্রমণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ লাখ টাকা। প্রস্তাবিত এসব ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয় পিইসি সভায়।

এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, সরকারি মৎস্য খামার আধুনিকীকরণ ও সরকারি বাঁওড় উন্নয়নে কাজ করা হবে। এ ছাড়া প্রযুক্তি সম্প্রসারণের জন্য খামারে উন্নত মৎস্য প্রযুক্তি স্থাপন করা হবে। প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে শুরু হয়ে ২০২৭ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে মৎস্য অধিদপ্তর।

পরিকল্পা কমিশন সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় নির্মাণকাজে ব্যয় প্রাক্কলনের ক্ষেত্রে মোট ব্যয়ের ৯ দশমিক ০৯ শতাংশ ডিজাইন অ্যান্ড কনসালটিং ব্যয় ধরা হয়েছে। প্রস্তাবিত প্রকল্পে ৫৩টি খামারে ৭ হাজার ১৬০ বর্গফুটের তিনতলা অফিস বিল্ডিং এবং ১২০টি খামারে ৪০০ বর্গফুটের লেবার শেড নির্মাণের প্রস্তাব রয়েছে। এর জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২৫১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এসব খামারে নবম গ্রেডের একজন ফার্ম ম্যানেজার এবং ১৩তম গ্রেডের একজন ক্লার্ক কাম টাইপিস্ট রয়েছেন। বিদ্যমান ২ জন জনবলের ওপর ভিত্তি করে ৭ হাজার ১৬০ বর্গফুটের তিনতলা অফিস নির্মাণ কতখানি যৌক্তিক তার ব্যাখ্যা চেয়েছে পিইসি। এ ছাড়া প্রকল্পে ১০টি প্যাকেজে ১ হাজার ১৮৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকার নির্মাণকাজের প্রস্তাব আছে।

সুশাসন নিয়ে জরিপের জন্যও চাই বিদেশে প্রশিক্ষণ : দেশে সুশাসনের কী অবস্থা, এ সম্পর্কে নাগরিকরা কী ধরনের মনোভাব পোষণ করেন; বিভিন্ন খাতে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি সম্পর্কে নাগরিকদের ধারণাসহ বিভিন্ন তথ্য জানতে জরিপের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। এ জন্য নেওয়া প্রকল্পে সংস্থাটির আটজন কর্মকর্তাকে বিদেশসফরে পাঠানোর প্রস্তাব করেছে তারা। তবে তাতে বিদেশসফরের প্রস্তাব বাতিলের পর প্রকল্পের মূল ব্যয় প্রস্তাবের মধ্যেও বাদ সেধেছে পরিকল্পনা কমিশন। আরও কিছু খাতে ব্যয় কমাতে বলা হয়েছে।

কমিশনের পাঠানো সিটিজেন পারসেপশন সার্ভে (সিপিএস) নামের এ প্রকল্পে ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ১৪ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, যা সরকারের তহবিল থেকে দেওয়া হবে। প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে- সুশাসন ও স্বচ্ছতা-সম্পর্কিত নাগরিক ধারণার তথ্য সংগ্রহ করা; শিক্ষা, চিকিৎসা ও অন্যান্য সরকারি সেবা গ্রহণে নাগরিকদের অভিজ্ঞতা এবং এ-সংক্রান্ত ধারণা জানা; নাগরিকের অংশগ্রহণমূলক রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন-সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করা; নিরাপদ, সাশ্রয়ী, সুলভ ও যোগাযোগ ও গণপরিবহনব্যবস্থার তথ্য; সমাজের সর্বত্র সব ধরনের অপরাধপ্রবণতা, সহিংসতা; বিচারপ্রার্থীদের বিচারব্যবস্থা সম্পর্কে ধারণা; স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের বিচারিক প্রক্রিয়ায় সময় ও অর্থ ব্যয়ের প্রবণতা-সম্পর্কিত তথ্য- ইত্যাদি বিষয়ে জরিপ চালানো।

পরিকল্পনা কমিশনের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, প্রকল্পটি মূলত এসডিজি-বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য জানার জন্য নেওয়া হচ্ছে। এর ব্যয় জরিপে নিয়োজিতদের প্রশিক্ষণ বা সম্মানী এবং তাদের কিছু সরঞ্জাম কেনায় ব্যবহৃত হবে। তবে এতে বিদেশসফরের যে প্রস্তাব এসেছিল, তা বাদ দেওয়া হয়েছে।

মূল প্রস্তাবটিতে রয়েছে জরিপকাজে নিয়োজিত ২ হাজার ১০০ জনের সম্মানী বাবদ ৪২ লাখ টাকা, যানবাহন ভাড়া ও জ্বালানিতে ৭৮ লাখ টাকা, সেমিনার ৪২ লাখ টাকা, দেশে ২ হাজার ২০০ জন ও বিদেশে ৮ জনের প্রশিক্ষণে ২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা (এ খাত থেকে বিদেশসফর বাদ যাবে) ব্যয়র কথা। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ ভ্রমণ ব্যয় ৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, গবেষণা ২ কোটি ১৫ লাখ টাকা, কম্পিউটার, আসবাব ও অফিস সরঞ্জামে ৪২ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।

 

বিমানের ফ্লাইট উদ্বোধন :সরকারি খরচে নারিতা যাচ্ছে ৭৯ জনের বহর, সাংবাদিক ২১ জন

ডেক্স রিপোর্ট : বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে সরকার যখন কৃচ্ছ্রসাধনের কথা বলছে, তখন সরকারি খরচে ৭৯ জনের বিশাল বহর নিয়ে জাপান যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। ঢাকা থেকে জাপানের নারিতায় বিমানের সরাসরি ফ্লাইট উদ্বোধন উপলক্ষে এই সফরের আয়োজন করা হয়েছে।

বিমান সূত্রে জানা গেছে, অতিথিরা সরকারি খরচে পাঁচ দিন জাপানে থাকবেন। এর জন্য বাজেট ধরা হয়েছে ২০ কোটি টাকা। উদ্বোধনী ফ্লাইটে এত অতিথি যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। তবে বিমান থেকে বলা হয়েছে, কতজন যাবে, এখনো তা চূড়ান্ত হয়নি। আবার অনেকের ভিসা পাওয়া-না পাওয়ার বিষয় রয়েছে।

বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শফিউল আজিম  বলেন, ‘উদ্বোধনী ফ্লাইট প্রমোশনের বিষয় আছে। বিমানের সঙ্গে জাপানি এয়ারলাইনসের অনেক বিষয় জড়িত রয়েছে। বিমানের নিজস্ব কর্মী, মন্ত্রণালয়, সিভিল এভিয়েশনের লোকজন রয়েছে। তবে যত সংখ্যার কথা বলা হচ্ছে, এটা ঠিক না। এর মধ্যে ২১ জন সাংবাদিককে আমরা নিয়ে যাচ্ছি।’

বিমানের তথ্যমতে, বাংলাদেশের কোনো এয়ারলাইনসের সরাসরি জাপানে ফ্লাইট নেই। আগামী ১ সেপ্টেম্বর ঢাকা-নারিতা ফ্লাইটের মাধ্যমে এটা শুরু হবে।

উদ্বোধনী ফ্লাইটটি ১ সেপ্টেম্বর রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে যাত্রা করবে। ২ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে জাপানের নারিতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবে। ওই দিন নারিতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে ফ্লাইট বিজি-৩৭৭ যাত্রা করবে।

উদ্বোধনী ফ্লাইট সামনে রেখে গত ২৫ জুলাই থেকে ঢাকা-নারিতা রুটের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। ঢাকার পাশাপাশি কাঠমান্ডু, দিল্লি ও কলকাতা থেকেও যাত্রীরা বিশেষ মূল্যে ওই রুটের টিকিট কিনতে পারছেন। ১৫ আগস্ট পর্যন্ত ৫ শতাংশ ডিসকাউন্ট মূল্যে টিকিট বিক্রি হয়েছে। অফার ছাড়া ঢাকা থেকে এ রুটের একমুখী সর্বনিম্ন ভাড়া ৭০ হাজার ৮২৮ টাকায় শুরু এবং রিটার্ন টিকিটের মূল্য শুরু জনপ্রতি ১ লাখ ১১ হাজার ৬৫৬ টাকা।

কারা যাচ্ছেন বিমানের বিলাসী বহরে : ঢাকা-নারিতা উদ্বোধনী ফ্লাইটে মোট ৭৯ জনের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে রয়েছেন মন্ত্রণালয়, বিমান, বেবিচক কর্মকর্তা ও সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলীর নেতৃত্বে মন্ত্রণালয়ের ২০ জন কর্মকর্তা সফরে যাচ্ছেন। বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিমানের ২৪ সদস্যের প্রতিনিধিদল—যার মধ্যে বিপণন, বাণিজ্যিক এবং অন্যান্য বিভাগের পরিচালক ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও রয়েছেন। প্রতিনিধিদলে থাকবেন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ২১ জন সাংবাদিক এবং ১০টি ট্রাভেল এজেন্সি, বিমানের টিকিট বুকিংসহ অনলাইনভিত্তিক পরিষেবার কাজ পাওয়া জিডিএস (গ্লোবাল ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম) কোম্পানি মিলে মোট ১৪ জন প্রতিনিধি থাকবেন।

১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ বিমানের ঢাকা-টোকিও ফ্লাইট চালু হয়েছিল। ১৯৮১ সালে সাময়িক বিরতির পর তা আবার চালু হয়। তবে তখন টোকিওর পরিবর্তে ঢাকা-নারিতা গন্তব্যে সেই ফ্লাইট চলত। ক্রমাগত লোকসানের কারণে ২০০৬ সালে এই গন্তব্যে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ করে দেয় বিমান। ১৭ বছর পর আবার সেই গন্তব্যে ফ্লাইট শুরু করা হচ্ছে।

 

 

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।