মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৫৫ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
আ‘লীগ- বিএনপির প্রার্থী ধরাশায়ী : বিপুল ভোটের ব্যবধানে জাপার (এ ) মোস্তফার বিজয়

সংবাদদাতা : আওয়মীলীগ ও বিএনপির প্রার্থীকে ধরাশায়ী করে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জাতীয় পার্টির ( এরশাদ) মোস্তফার বিজয় হয়েছে। বিএনপির প্রর্তী বাবলা এ ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছেন। আওয়মীলীগ সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলছেন, এটা আওয়ামীলীগের পরাজয় হও গণতন্তের বিজয় হয়েছে।

একেবারেই প্রতিদ্বন্দিতাহীনভাবেই রংপুর সিটি কর্পোরেশন (রসিক) নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা। ১৯৩ টি কেন্দ্রে লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী মোস্তফা ১,৬০,৪৮৯ ভোটে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›িদ্ব আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সরফুদ্দীন আহমেদ ঝন্টু পেয়েছেন ৬২,৪০০। তৃতীয় হন বিএনপির ধানের শীষের প্রার্থী কাওসার জামান বাবলা পেয়েছেন ৩৫,১৩৬। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ঘণকুয়াশা আর শীতের মধ্যেই ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে নির্বাচনে প্রায় ৭০ শতাংশ ভোট পড়েছে। ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৯৯৪ জন ভোটারের মধ্যে প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।

দেশের উত্তর জনপদে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে শান্তপূর্ণভাবে ২১ ডিসেম্বর  বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ১৯৩টি কেন্দ্রে একযোগে ভোটগ্রহণ হয়। মেয়র পদে দলীয় প্রতীকে ৭ প্রার্থীর সঙ্গে ৩৩ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেন ২৭৬ জন। রিটার্নিং কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র সরকার জানান, বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে তথ্য পাওয়ার পর পুলিশ কমিউনিটি হলে বসানো নিয়ন্ত্রণ কক্ষে ভোট গণনা করা হয়। নির্বাচনে কোনো কেন্দ্র থেকেই গোলযোগের কোনো খবর আসেনি। যাকে নজিরবিহীন শান্তিপূর্ণ বলছেন ভোটাররা।  প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদাও বলেছেন, ‘সুষ্ঠু ও সুন্দর’ পরিবেশে উৎসবের আমেজে ভোট হওয়ায় কমিশন ‘সন্তুষ্ট’।
সিটি কর্পোরেশনের এই নির্বাচনকে ঘিরে গত কয়েকদিন ধরেই নগরজুড়ে ছিল উৎসবের আমেজ। উৎসবের এই ভোটে যাতে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নেয়া হয় নজির বিহীন বাড়তি নিরাপত্তা। ভোটের আগের দিন ২০ ডিসেম্বর  বুধবার রাত থেকেই নগরীতে গড়ে তোলা হয় চার স্তরের নিরাপত্তা বলয়। ২১ প্লাটুন বিজিবিসহ র‌্যাব, পুলিশ ও আনসারের প্রায় ৫ সহস্রাধিক সদস্যকে নিয়োজিত করা হয় ভোট কেন্দ্রসহ গোটা নগরীর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে। ৩৩টি ওয়ার্ডে ৩৩ জন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ছাড়া আরো ৬ জন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করে। প্রতিটি কেন্দ্রে একজন প্রিজাইডিং অফিসার, একজন সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার, দশ জন পুলিশ ও ১৪ জন আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকে। প্রতিটি ওয়ার্ডে থাকে টহলরত অবস্থায় থাকে র‌্যাবের একটি করে দল। গুরুত্বপূর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোর কয়েকটিতে বসানো হয় ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। অবশিষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত কেন্দ্রগুলোতে ছিল প্রশাসনের বাড়তি সতর্কতা।
সরকারী বেগম রোকেয়া কলেজ কেন্দ্রে ভোট নেয়া হয় ইভিএম এর মাধ্যমে। বুধবার রাত থেকেই নগরীর প্রবেশদ্বারগুলোতে চেকপোষ্ট বসিয়ে যান চলাচলে কঠোর নিয়ন্ত্রণ করা হয়। রিক্সা, অটো রিক্সা, কার মাইক্রোসহ সকল ধরণের যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। যে কোন ধরনের যানবাহন নগরী থেকে বাহিরে যেতে দেয়া হলেও নগরীতে কোন যানবাহনকে ঢুকতে দেয়া হয়নি।
ভোটের দিন  সকাল ৭টার দিকে নগরীর বেশ কয়েকটি ভোট কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায় ভোটাররা বেশ উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে ভোট কেন্দ্রে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। বিশেষ করে মহিলা ভোটাররা প্রচন্ড শীত উপেক্ষা করে সকাল ৭টার আগেই ভোট কেন্দ্রে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে যান। বেলা যতই বাড়তে থাকে মহিলা ভোটারদের লাইন ততই বড় হতে থাকে। এ সময় পুরুষ ভোটারদের খুব কম দেখা গেছে। পরে দুপুর ১২টার পর থেকে পুরুষ ভোটারদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। সকাল থেকে ভোট গ্রহন শেষ পর্যন্ত নগরীর প্রায় শতাধিক কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে ভোটারদের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহন ছিল উল্লেখ করার মত। ভোট কেন্দ্রগুলো সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি ভোট কেন্দ্রের পরিবেশ ছিল অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ। দু’ একটি কেন্দ্রে জ্বাল ভোট দেয়ার চেষ্টা করলে তারা ধরে পড়ে যায়। এ নিয়ে ঐসব কেন্দ্রে কিছুটা উত্তেজনার সৃষ্টি হলেও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তা দ্রæত প্রশমিত হয়। নগরীর মধ্যখানে মুন্সিপাড়া এলাকায় মাওলানা কেরামত আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে প্রভাব বিস্তার নিয়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এসময় প্রায় ঘন্টাখানেক ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকে। তবে এখানেও প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপে দ্রæত তা নিয়ন্ত্রণে আসে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে পুনরায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়। কয়েকটি স্থানে বিএনপির ধানের শীষের প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের ঢুকতে না দেয়া, কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়াসহ হুমকি প্রদানের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। বিভিন্ন স্থানে কয়েকজন কাউন্সিলরের দেয়া জ্বাল ভোট প্রদানের অভিযোগের ভিত্তিতে কেন্দ্রগুলো পরিদর্শনকালে প্রিজাইডিং অফিসারসহ কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এসব স্থানে বিচিছন্নভাবে কয়েকবার জাল ভোট দেয়ার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু দিতে পারেনি। উত্তম গোয়ালু ভোট কেন্দ্রে জাল ভোট দেয়ার চেষ্টা করলে ২ যুবককে প্রশাসন আটক করে রাখে। বিকেল পৌনে ৪টায় ৩নং ওয়ার্ডের উত্তম স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে সেখানকার মহিলা ভোট কেন্দ্রের একটি ভোট কক্ষে ভোটাররা গোপন কক্ষে না গিয়েই প্রকাশ্যে সিল মেরে ব্যালট বাক্সে ব্যালট ঢুকাচ্ছেন ভোটাররা। এছাড়াও সেখানে খুব ধীর গতিতে ভোট হওয়ার অভিযোগ করেছেন ভোটাররা। ওই কেন্দ্রে লাঙ্গলের এজেন্ট থাকলেও নৌকা, ধানের শীষসহ অনেকেরই এজেন্ট দেখা যায়নি। এ বিষয়ে ওই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার টিটিসির শিক্ষক গোলাম ফারুক জানেিয়ছেন, বিষয়টি লক্ষ্য না করার কারনে হয়েছে। তবে নলেজে আসা মাত্রই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তিনি জানান, ওই কেন্দ্রে ১ হাজার ৯’শ ৫৩ ভোটের মধ্যে পৌনে ৪ টা পর্যন্ত প্রায় ৮০ ভাগ ভোট পড়েছে। এছাড়া কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি তার কেন্দ্রে।
দুপুর পৌনে ২ টায় ১৪ নং ওয়ার্ডের দেওডোবা জামালিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে সেখানে ভোটাররাদের ভিড় লেগেই আছে। ওই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার অগ্রনী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার মাহফুজুর রহমান জানান, ওই কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ২’শ ৯৭ জন। এরমধ্যে পৌনে ২ টা পর্যন্ত ৭০ ভাগ ভোট পড়েছে। ১৫ নং ওয়ার্ডের ফতেহপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেড়টায় গিয়ে দেখা গেছে সেখানে তেমন একটা ভোটার নেই। ওই কেন্দ্রের প্রিজাডিং অফিসার অগ্রনী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার এনামুল হক জানান, তার কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা রয়েছে ২ হাজার ১’শ ৮৫। দেড়টা পর্যন্ত পড়েছে ৬৫ ভাগ।
এছাড়াও বিকেল চারটার কিছু আগে ১৫ নং ওয়ার্ডের মডার্ন পাবলিক স্কুল কেন্দ্রে ডালিম প্রতীকের প্রাথী শাফিউল ইসলাম শাফীর সমর্থক শাহিন মিয়াকে ব্যাপক মারধোর করে প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীর লোকজন। এসময় সেখানে উত্তেজনা তৈরি হলে প্রশাসন গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অন্যদিকে ১৯ নং ওয়ার্ডের রংপুর মেডিকেল কলেজ পাবলিক স্কুল কেন্দ্রে মেডিতেল কলেজ শাখার দুই ছাত্রলীগ নেতা জাল ভোট দিতে গিয়ে ধরা পড়লে তাদেরকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়। অন্যদিকে ৩৩ নং ওয়ার্ডের আজিজুল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
বিএনপি প্রার্থী কাওছার জামান বাবলার প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট শহিদুল ইসলাম মিজু অভিযোগ করেছেন, ১৫ নং ওয়ার্ডের ফতেহপুর উচ্চ বিদ্যালয়, ১৪ নং ওয়ার্ডের দেওডোবা জামালিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৯ নং ওয়ার্ডের একটি কেন্দ্রে ধানের শীষের প্রতীকের এজেন্টকে বের করে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও বিভ্ন্নি জায়গায় ইলেকশনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। তবুও মানুষ স্বত:স্ফুর্তভাবে ভোট কেন্দ্রে গেছে।
লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট এসএম ইয়াসির অভিযোগ করেছেন, কেরামতিয়া স্কুল এন্ড কলেজে বেলা ১২ টায় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের বাহিনী ভোটারদের মাঝে প্রভাব বিস্তার করে জাল ভোট দেয়ার চেষ্টা করে। পরে আমরা সেখানে গিয়ে বিষয়টি প্রতিহত করি। এছাড়াও দুপুরের পড়ে মেডিকেল কলেজ কেন্দ্রে মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করে। এসময় বেশ উত্তেজনা তৈরি হয় সেখানে।
তবে যানবাহন সংকটের মধ্যে পড়েছেন ভোটাররা। নগরীর প্রধান সড়কে দুই একটি অটো রিকশা ও রিকশা দেখা গেলেও কড়া নিরাপত্বার কারনে লিংক সড়কগুলোতে অন্য কোন যানবাহন চলতে দেয়া হয়নি। ফলে ভোটাররা কস্ট করে ভোট কেন্দ্রে পৌছেছেন। অটো রিকশা মাঝে মধ্যে চললেও তা তল্লাশীর পাল্লায় পড়ছে।
রংপুর পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, নির্বিঘেœ ভোট প্রদান নিশ্চিত করতে নগর জুড়ে সাড়ে পাঁচ হাজার আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যকে মোতায়েন করা হয়েছে। ভোট কেন্দ্র ছাড়াও ভোট কেন্দ্রের বাইরে মোবাইল টিম, স্ট্রাইকিং ফোর্স, স্ট্যান্ডবাই ফোর্স, মহাসড়কে রণ পাহারা, চেক পোস্ট, সেক্টর ডিউটিসহ বিভিন্ন শিরোনামে এসব দায়িত্ব পালন করছে আইনশৃংখলাবাহিনী। পুরো নগরী নিচ্ছিদ্র নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে আইনশৃংখলা বাহিনী। তিনি আরও বলেন, এই নির্বাচনে ১১ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ১১ টি এবং ৩৩ টি ওয়ার্ডে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে ৩৩ টি ভ্রাম্যমান আদালত, ২১ প্লাটুন মোট ৫২৫ জন বিজিবি ও ৩৩ টি র‌্যাবের টিমে ২৬৪ জন র‌্যাব সদস্য মাঠে কাজ করছে।
রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র সরকার জানান, রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে ১’শ ৯৩ টি ভোট কেন্দ্রের ১ হাজার ১’শ ২২ টি ভোট কক্ষে। এছাড়াও অস্থায়ী ভোট কক্ষ ছিল ১’শ ৬৬ টি। এরমধ্যে ১’শ ২৮ টি কেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ন ধরা হয়েছিল। এই নির্বাচনে ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের বেগম রোকেয়া সরকারী কলেজ কেন্দ্রে ইভিএম দিয়ে ভোট গ্রহন ছাড়া সব কেন্দ্রে আগের মতোই ব্যালট ও সিলে ভোট গ্রহন করা হয়েছে।
মুল প্রতিদ্ব›িদ্বতাকারী ৩ প্রার্থী যেখানে ভোট দিলেন
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ৭ জন প্রতিদ্ব›িদ্বতা করলেও ভোটারদের মাঝে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন লাঙ্গল, নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীরা। এই তিন প্রার্থীর মধ্যে ধানের শীষের প্রার্থী কাওছার জামান বাবলা সকাল ৯টায় নগরীর মাহিগঞ্জ দেওয়ানটুলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে ভোট প্রদান করেন। ভোট প্রদান শেষে তিনি সাংবাদিকদের অভিযোগ করে বলেন, বিভিন্ন স্থানে তার পোলিং এজেন্টদের বাধা দেয়া হচ্ছে। সকাল ৯টা পর্যন্ত তার এজেন্টকে ঢুকতে দেয়া হয়নি। তিনি আরও বলেন, আমরা বার বার বলেছিলাম, সেনাবহিনী মোতায়েন করা হোক। কিন্তু সরকার ধানের শীষের ভয়ে ভীত হয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন করে নি। এই নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হওয়া নিয়ে আমরা সংশয় প্রকাশ করে এসেছি। এখনও করছি। এই নির্বাচনটি লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে নির্বাচন কমিশন। তার প্রমাণ নির্বাচন কমিশনই বলছে ১’শ ৯৩টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ১’শ ২৮টি ঝুঁকিপূর্ন ।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সকাল পৌনে দশটায় নগরীর সেনপাড়া শিশু মঙ্গল স্কুলে ভোট প্রদান করেন। এ সময় তার সাথে ছিলের সাবেক মন্ত্রী ও জাপার কো-চেয়ারম্যান জি,এম কাদের, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গাসহ মোস্তফার নির্বাচন সমন্বয়কারী এস,এম ইয়াসির। এ সময় এরশাদ বলেন, ভোট সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ। এই নির্বাচন ইসির জন্য চ্যালেঞ্জ এবং পরীক্ষা। আশা করছি, আমরা বিজয়ী হব। জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমার মোস্তফা ভোট দেন সকাল সাড়ে ৯টায় নগরীর মহানগরীর ২১নং ওয়ার্ডের আলমনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দে। সরকার এবং নির্বাচন কমিশন চায় এই নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। কিন্তু আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবং তার সমর্থকরা নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র করছে বলে আমরা শুনছি। কোনও ভোট কেন্দ্রে যদি কোনও পক্ষ লাঙ্গলের বিজয় ঠেকাতে কোন ধরনের ঝামেলা করার চেষ্টা করে তাহলে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা তা সর্বশক্তি প্রতিহত করবে। প্রতিহত করতে গিয়ে যা করতে হয় তাই করবে। আমরা কোন ছাড় দেব না।লাঙ্গল এবং মোস্তফার পক্ষে আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে ভোটের জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতাকারী অন্যতম মেয়র প্রার্থী সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু ভোট দেন সকাল সাড়ে দশটায় নগরীর ২৪ নং ওয়ার্ডের সালমা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে। এসময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমি কাউকে ভয় দেখিয়ে ভোট চাই নি। এখানে ভোট সুষ্ঠু ভাবে হচ্ছে। কাউকে কেউ বাধা দিচ্ছে না। আমি আড়াই হাতি লাঠি সঙ্গে রাখতেও বলছি না। জনগণ উন্নয়নের পক্ষে থাকবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।