শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:১১ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
একজন সফল শিল্প উদ্যোক্তার বিদায়

ডেক্স রিপোর্ট : দেশের বিশিষ্ট শিল্প উদ্যোক্তা, ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। গত ১ জুলাই  বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে নিজ বাসভবনে তিনি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। স্ত্রী, দুই সন্তান, আত্মীয়-স্বজনসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন তিনি। দৈনিক প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান মিডিয়াস্টার লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক লতিফুর রহমানের মরদেহ গতকালই ঢাকায় আনা হয়। গুলশানের আজাদ মসজিদে বাদ এশা তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর রাতেই বনানী কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।

বিশিষ্ট ব্যবসায়ী লতিফুর রহমান ১৯৪৫ সালের ২৮ আগস্ট জলপাইগুড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকার গেণ্ডারিয়ায় থাকতেন। পড়াশোনা শুরু করেন সেন্ট ফ্রান্সিস স্কুলে। সেখান থেকে ১৯৫৬ সালে শিলংয়ের সেন্ট এডমন্ডস স্কুলে। তারপর কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে। ১৯৬৫ সালে ঢাকায় ফিরে এসে ১৯৬৬ সালে ডব্লিউ রহমান জুট মিলে ট্রেইনি হিসেবে কাজ শুরু করেন। দেড় বছর কাজ শেখার পর নির্বাহী হিসেবে যোগ দেন। এভাবে কাজ করেন ১৯৭১ সাল পর্যন্ত। ১৯৭২ সালে তিনি সবকিছু নতুন করে শুরু করেছিলেন প্রায় শূন্য হাতে। ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে নীতি-নৈতিকতা, সুনাম আর সততার স্বীকৃতি হিসেবে ২০১২ সালে তিনি ব্যবসা-বাণিজ্যের জগতে নোবেল বলে খ্যাত ‘বিজনেস ফর পিস অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেন।
লতিফুর রহমানের ট্রান্সকম গ্রুপের শুরুটা চা চাষের মাধ্যমে। এখন বাংলাদেশের অন্যতম একটি বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠান এটি। যার রয়েছে ১৬টি কোম্পানি। এই গ্রুপে ফাস্টফুড, কোমল পানীয়, ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক পণ্য, ওষুধ, সংবাদপত্র, চা শিল্প, বীমা ইত্যাদি ব্যবসায়ের সঙ্গে জড়িত। লতিফুর রহমান নেসলে বাংলাদেশ, হোলসিম বাংলাদেশ এবং ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স ও ইনভেস্টমেন্টের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি লিন্ডে বাংলাদেশ এবং এনজিও ব্র্যাকের গভর্নিং বোর্ডের পরিচালক ছিলেন। আইসিসি বাংলাদেশের সহ-সভাপতি ছিলেন।
লতিফুর রহমানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ, তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক ও একই মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি শামস মাহমুদসহ বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদরা। শোক বার্তায় তারা মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।
উল্লেখ্য, চার বছর আগে একই দিনে ঢাকার গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে নৃশংস জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারান লতিফুর রহমানের প্রিয় নাতি ফারাজ আইয়াজ হোসেন।

 

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।