শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১১:৩০ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
বিশ্ব ইজতেমায় যেতে পারলেন না ভারতীয় মাওলানা সাদ : ইসলামি দলগুলোর সাথে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দফায় দফায় বৈঠক : অবশেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন বিশ্ব ইজতেমায় যাবেন না ভারতীয় মাওলানা সাদ:

একুশে বার্তা ডেক্স : ভারতের তাবলিগ জামাতের মুরব্বি মাওলানা সাদ বিশ্ব ইজতেমার মাঠে যেতে পারলেন না। শেষ পর্যন্ত মাওলানা সাদ ইজতেমায় যাবেন না – এমন সিদ্ধান্তের কথা জানালেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। মাওলানা সাদ দেশে ফিরে যাবেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

তবে তিনি সুবিধামতো সময়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে যাবেন।১১ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে তাবলিগ জামাতের দুপক্ষকে নিয়ে বৈঠক শেষে এসব কথা জানান তিনি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ভারতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি কাকরাইল মসজিদেই অবস্থান করবেন।এছাড়া বিশ্ব ইজতেমার আখেরী মোনজাত কে পরিচালনা করবেন তা ঠিক করবেন তাবলিগ জামাতের মুরব্বিরা।

তিনি বলেন, মাওলানা সাদের কিছু বক্তব্যকে কেন্দ্র করে দিল্লি নিজামুদ্দিনের তাবলিগের কেন্দ্রীয় মারকাজেই বিরোধ দেখা দেয়। এই বিরোধের রেশ আমাদের দেশেও এসে গড়ায়। আমরা দফায় দফায় বৈঠক করে এই বিরোধ নিষ্পত্তির উদ্যোগ নিই। আজকে দীর্ঘ সময় ধরে উভয়পক্ষের মুরুব্বিদের সঙ্গেও আমরা বৈঠক করি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সভাপতিত্বে বৈঠকে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইনশৃংখলা বাহিনীর শীর্ষ ব্যক্তিরা, আলেম এবং কাকরাইল মারকাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

এর আগে এই উত্তেজনার কারণে মাওলানা সাদ ইজতেমায় অংশ নিচ্ছেন না বলে জানিয়েছিলেন ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।

সাদবিরোধী বিক্ষোভের মধ্যে নতুন করে বিশৃংখলা এড়াতে কাকরাইল মসজিদ এলাকায় ১০ জানুয়ারি  বুধবার রাত থেকেই নেয়া হয় ব্যাপক নিরাপত্তা।

১১ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সরকারের যে সিদ্ধান্ত, তাতে দিল্লির মাওলানা মোহাম্মদ সাদ টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমায় যাচ্ছেন না। তাকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিয়ে রাজধানীর কাকরাইল মসজিদে রাখা হয়েছে।’

বিশ্ব ইজতেমায় মাওলানা সাদের অংশগ্রহণের বিরোধিতা ও তাবলিগ জামাতের একাংশের আন্দোলনের কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হলো।এবারের ইজতেমায় মাওলানা সাদ যাতে অংশ নিতে না পারে, সে জন্য আগে থেকেই বিরোধিতা করে আসছিল তাবলিগ জামাতের একাংশ।

১০ জানুয়ারি বুধবার সাদের আগমনের খবর পেয়ে সকাল থেকে বিমানবন্দর চত্বরে বিক্ষোভ করেন তাবলিগের একাংশের সমর্থক মুসল্লিরা। পরে মাওলানা সাদ বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে যাবেন না পুলিশের পক্ষ থেকে এমন আশ্বাস পেয়ে আন্দোলন স্থগিত করা হয়।

এর আগে বিকাল সাড়ে ৩টায় তাকে পুলিশ পাহারায় বিমানবন্দর থেকে কাকরাইল মসজিদে নেয়া হয়।

উল্লেখ্য, মাওলানা সাদ ‘তাবলিগ করা ছাড়া কেউ বেহেশতে যেতে পারবে না’ বলে বক্তব্য দেয়ায় তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসা।সেখান থেকে মাওলানা সাদকে এ বক্তব্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হয়। কিন্তু তিনি উল্টো যুক্তি দেন। এ নিয়ে মাওলানা সাদের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

একপর্যায়ে দেওবন্দ মাদ্রাসার অনুসারী বাংলাদেশের আলেমরা তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। তারা তাকে টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমায় আসতে না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন।তাবলিগ জামাতের বাংলাদেশ শাখার ১১ শূরা সদস্যের মধ্যে ছয়জনই আলেমদের এ সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেন।

তুরাগ নদের তীরে টঙ্গীতে  ১২ জানুয়ারি শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে দাওয়াতে তাবলিগের ৫৩তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। এতে অংশ নিতে এর মধ্যেই মুসল্লিরা ময়দানে আসতে শুরু করেছেন। মুসল্লিদের পদচারণায় ময়দানের অনেকাংশ মুখর হয়ে উঠেছে।

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।