শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৩৮ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সংলাপ গুরুত্বপূর্ণ: যুক্তরাষ্ট্র

একুশে বার্তা ডেক্স : বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সংলাপকে জরুরি বলে মনে করে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে দেশটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ এবং অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে আলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। গত ৩১ অক্টোবর  মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এসব কথা জানিয়েছেন।

ম্যাথিউ মিলারকে প্রশ্ন করা হয়, আমেরিকা ও ইউরোপীয়রা বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দাবি করেছে। আমেরিকা কি জানে যে,২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ভারতের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সমর্থন রয়েছে? এই অবস্থায় বাংলাদেশি জনগণের ভোটাধিকার থাকা ও একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হওয়া যৌক্তিক হলেও অসম্ভব।

আমার দ্বিতীয় আরেকটি প্রশ্ন হলো, শেখ হাসিনা গতকাল রাতে সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের নিরাপত্তার বিষয়ে কিছু উসকানিমূলক ও আপত্তিকর মন্তব্য করেছিলেন। পৃথিবীতে খুব কম মানুষই শেখ হাসিনার শারীরিক ভাষা ও ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ বোঝে। তিনি একই কাজ করেছিলেন ২০১৮ সালের ৪ আগস্ট। সে সময় (মার্কিন রাষ্ট্রদূত) মার্সিয়া বার্নিকাটের গাড়িতে শেখ হাসিনার নির্দেশেই হামলা হয়েছিল। তিনি সংবাদ সম্মেলনে বসে আবারও সেই একই ঠাট্টা এবং একই বিদ্রূপ করছেন—  ?

জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমি শুধু বলতে চাই, আমরা স্পষ্ট করে বলেছি যে—আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে কী প্রত্যাশা করি। যেমনটা আমরা আশা করি, প্রতিটি সরকারই কূটনীতিকদের নিরাপদ সুরক্ষার জন্য ভিয়েনা কনভেনশনের বাধ্যবাধকতা মেনে চলবে। আপনার প্রথম প্রশ্নটির প্রেক্ষাপটে আমি বলতে চাই, যেমনটি আমি আগেও বলেছি, গতকালও বলেছি—অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব সবার। সব রাজনৈতিক দল, ভোটার, সরকার, নাগরিক সমাজ এবং গণমাধ্যমের। আর আমরা বাংলাদেশে যা চাই, বাংলাদেশের জনগণও তাই চায়। সেটি হলো—যাতে শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন।’

আরেকটি প্রশ্নে ম্যাথিউ মিলারকে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের ক্ষমতাসীন ও বিরোধীদের মধ্যে সংলাপের আহ্বানের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যদি সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সংলাপে বসেন তারপর তিনি বিরোধীদের সঙ্গে সংলাপে বসবেন কিনা সে বিষয়ে ভাববেন। তিনি রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে কোনো সংলাপের বিষয়টি অস্বীকার করেছে। তিনি এবং তাঁর প্রশাসন বিরোধীদের ওপর ব্যাপক আক্রমণাত্মক আচরণ করছে। আজ (গতকাল মঙ্গলবার) পুলিশের গুলিতে বিরোধীদলীয় দুই নেতা নিহত হয়েছে, গ্রেপ্তার হয়েছেন অনেকে। এরই মধ্যে ঢাকায় গ্রেপ্তার হয়েছে (বিএনপির) দুই শীর্ষ নেতা। প্রতিদিনই তারা বিরোধী দলের নেতা–কর্মীদের গ্রেপ্তার করছে। তাহলে আপনি কীভাবে বিশ্বাস করবেন যে, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে?

জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘আপনার প্রশ্নের প্রথম অংশের বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। তবে এটি বলতে চাই যে, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরা আগে যে লক্ষ্যগুলো উল্লেখ করেছি—আমরা বিশ্বাস করি যে সেই লক্ষ্যগুলো অর্জনের জন্য সংলাপ গুরুত্বপূর্ণ।’

মিলার আরও বলেন, ‘আপনার দ্বিতীয় প্রশ্নের জবাবে আমি বলতে চাই, আমরা জানুয়ারির নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের নির্বাচনী পরিবেশ ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং সহিংসতার ঘটনাগুলোকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছি। আমরা সরকার, বিরোধী দল, নাগরিক সমাজের এবং অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে বাংলাদেশের জনগণের সুবিধার জন্য, শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে তাদের একত্রে কাজ করার আহ্বান জানাতে কাজ করে যাচ্ছি এবং আমরা তা চালিয়ে যাব।

 

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।