বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ০২:২২ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
রিজার্ভ কেলেঙ্কারির ২ বছর : এখনো ফেরত আসেনি ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার

বাণিজ্য ডেক্স : বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির দুই বছর পূর্ণ হয়েছে গত ৪ ফেব্রুয়ারি। ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিজার্ভ থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি করে নেয় হ্যাকাররা। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে সুইফ্‌ট কোডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের এই অর্থ চুরি করে নেয়া হয়। চুরি হওয়া এই অর্থের মধ্যে ২ কোটি ডলার শ্রীলঙ্কা এবং বাকি ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চলে যায় ফিলিপাইনের জুয়ার আসরে। ইতিমধ্যে শ্রীলঙ্কা থেকে ২ কোটি ডলার এবং ফিলিপাইন থেকে ১ কোটি ৪৫ লাখ ডলার ফেরত আনা হয়েছে। ফিলিপাইনে থাকা অবশিষ্ট ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার (৫৪৪ কোটি টাকা) এখনো ফেরত আনা সম্ভব হয়নি।

কবে ফেরত আনা যাবে বা আদৌ আনা যাবে কিনা তা নিশ্চিত করতে পারছে না কেউ।
এদিকে ১২ লাখ ডলার বাংলাদেশ ব্যাংকে ফেরত আসার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়া আরও ছয় মিলিয়ন ডলার আসার ক্ষেত্রে অনেক অগ্রগতি হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে।
জানা গেছে, বিশ্বব্যাপী আলোচিত এই ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন গভর্নর ড. আতিউর রহমান পদত্যাগ করেন। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর কোনো কর্মকর্তাকে রিজার্ভ চুরির ঘটনায় এখন পর্যন্ত শাস্তির আওতায় আনা যায়নি। অবিলম্বে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে দায়ীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
সূত্র জানায়, রিজার্ভ চুরির ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিনকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দিলেও এখন পর্যন্ত সরকার তা পকাশ করেনি। অন্যদিকে রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ২০১৬ সালের ১৫ই মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে মতিঝিল থানায় দায়ের একটি মামলায় দায়ের করা হয়। মামলাটি তদন্ত করছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ইতিমধ্যে ২৩ মাস হতে চলেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সিআইডি’র পক্ষ থেকে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়নি। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ২০ বার আদালত থেকে সময় নিয়েছে সিআইডি।
এদিকে ফরাস উদ্দিনের তদন্ত রিপোর্ট আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ না হওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনও কর্মকর্তাকেই এর জন্য দায়ী করা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। ২৯শে জানুয়ারি মুদ্রানীতি ঘোষণাকালে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৪৫ লাখ ৪০ হাজার ডলার ফেরত এসেছে। আরও ১২ লাখ ডলার ফেরত আসার চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। এর বাইরে আরও ৫ কোটি ডলার ফেরত আসার বিষয়ে আদালতের বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। এছাড়া আরো ৬০ লাখ ডলার আসার ক্ষেত্রে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। এই ৬০ লাখ ডলার আনার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সিআইডি’র একটি দল ২৯ জানুয়ারি ফিলিপাইনে গেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ রিজার্ভ চুরির অর্থ ফেরত আনা প্রসঙ্গে বলেন, সরকারের এই মুহূর্তে করণীয় হলো, প্রশাসনিক ও সিআইডি’র তদন্ত প্রতিবেদন দু’টি দ্রুত প্রকাশ করা উচিত। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার, ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে।

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।