সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:০৭ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৬ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী :মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সিনেমায় তুলে ধরতে হবে, আরো উন্নতমানের ছবি বানাতে হবে, যে ছবি সমাজের কথা বলবে

বিনোদন ডেক্স : ‘বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছিলাম আর তারই চেষ্টায় চলচ্চিত্র শিল্পেরও ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন হয়। আমাদের চলচ্চিত্র কোন এক সময়ে বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। এখন কিন্তু আবার চলচ্চিত্রের সেই জগৎটা ফিরে এসেছে। তবে আমি চাই আমাদের চলচ্চিত্র ও শিল্পীরা আরো আধুনিক হবে। কেননা এটা ডিজিটাল বাংলাদেশ। সম্প্রতি আমরা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উত্থাপন করেছি।

আমাদের সিনেমা তৈরি বা পরিবেশনার ক্ষেত্রেও আধুনিকতা আসুক। ডিজিটাল পদ্ধতির এই চলচ্চিত্র আরো বেশি করে গ্রাম পর্যন্ত পৌঁছে যাক’- রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের হল অব ফেমে আজ রবিবার বিকেলে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৬’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আরও বলেন, আমরা আরো উন্নতমানের ছবি বানাতে চাই। যে ছবি সমাজ সংস্কারে একটা ভাল ভূমিকা রাখবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে, আমাদের সংগ্রামের সঠিক ইতিহাসের চিত্রগুলো মানুষের কাছে তুলেধরা প্রয়োজন।

আমাদের সব সময় মনে রাখতে হবে আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বের দরবারে মাথা উচু করে চলতে চাই। কোন দিকেই আমরা পিছিয়ে থাকতে চাই না। শিল্পের দিক থেকে, বিশেষ করে চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য বলছি, আমরা বিশ্বমানের চলচ্চিত্র বানিয়ে যেন এগিয়ে যেতে পারি। তার জন্য যা যা করা দরকার আমি সবই করব।

বর্ণাঢ্য এ আয়োজনে তথ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক পূর্বঘোষিত ২৬ টি ক্যাটাগরিতে বিজয়ীদের হাতে পুরষ্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্যপ্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, তথ্য সচিব আবদুল মালেক ও তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহ এমপি।

এসময় চলচ্চিত্র শিল্পে অসামান্য অবদানের জন্য চিত্রনায়িকা ফরিদা আকতার ববিতা ও চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুককে যুগ্মভাবে আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয়।

‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৬’ সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কার পেয়েছেন তৌকীর আহমেদ নির্মিত ইমপ্রেস টেলিফিল্মের চলচ্চিত্র ‘অজ্ঞাতনামা’। সেরা পরিচালকের পুরস্কার পেলেন অমিতাভ রেজা চৌধুরী তার ‘আয়নাবাজি’ চলচ্চিত্রের জন্য। এই ছবিতে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন চঞ্চল চৌধুরী। সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার যৌথভাবে পেয়েছেন নুসরাত ইমরোজ তিশা ও কুসুম শিকদার। তাদের অভিনীত চলচ্চিত্রের নাম যথাক্রমে ‘অস্তিত্ব’ ও ‘শঙ্খচিল’।

শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন এস এম কামরুল হাসানের ‘ঘ্রাণ’। শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার পান যৌথভাবে একান্তর মিডিয়া লিমিটেড ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ‘জন্মসাথী’ ছবির জন্য। একান্তর মিডিয়া লিমিটেডের পক্ষ থেকে পুরস্কার গ্রহন করেন মোজাম্মেল হক বাবু এবং মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের পক্ষ থেকে মফিদুল হক।

সেরা কণ্ঠশিল্পীর পুরস্কার পেলেন মেহের আফরোজ শাওন ও ওয়াকিল আহমেদ। ছবির নাম যথাক্রমে ‘কৃষ্ণপক্ষ’ ও ‘দর্শন বিসর্জন’।

পার্শ্ব চরিত্রের সেরা অভিনেতা হিসেবে যৌথভাবে পুরস্কার পেয়েছেন আলীরাজ (পুড়ে যায় মন) ও ফজলুর রহমান বাবু (মেয়েটি এখন কোথায় যাবে) এবং সেরা অভিনেত্রী তানিয়া আহমেদ (কৃষ্ণপক্ষ)। সেরা খল চরিত্রে শহীদুজ্জামান সেলিম ‘অজ্ঞাতনামা’ ছবির জন্য। ‘শঙ্খচিল’ ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী আনুন রহমান খান। শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক ও সুরকারের পুরষ্কার পেলেন ইমন সাহা ‘মেয়েটি এখন কোথায় যাবে’ ছবির জন্য। ‘মেয়েটি এখন কোথায় যাবে’ সিনেমার ‘বিধিরে ও বিধি বিধি’ গানের জন্য শ্রেষ্ঠ গীতিকারের পুরস্কার পেয়েছেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। শ্রেষ্ঠ নৃত্য পরিচালক মোঃ হাবিব ‘নিয়তি’ ছবির জন্য। শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার তৌকীর আহমেদ ‘অজ্ঞাতনামা’ ছবির জন্য। শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকারের পুরস্কার যৌথভাবে অনম বিশ্বাস ও গাউসুল আলম ‘আয়নাবাজি’ ছবির জন্য। শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা সৈয়দ রুবাইয়াত হোসেন (আন্ডারকনস্ট্রাকশন), শ্রেষ্ঠ সম্পাদক ইকবাল আহসানুল কবির (আয়নাবজি), শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক উত্তম গুহ (শঙ্খচিল), শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক রাশেদ জামান (আয়নাবজি), শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক বিপন নাথ (আয়নাবাজি), শ্রেষ্ঠ পোষাক ও সাজসজ্জা পুরস্কার পেলেন যৌথভাবে সাত্তার (নিয়তি) ও ফারজানা সান (আয়নাবাজি)। শ্রেষ্ঠ মেকআপম্যান মানিক ‘আন্ডারকনস্ট্রাকশন’ ছবির জন্য।

সবশেষে ছিলো চলচ্চিত্র শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।