সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৪৪ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
প্রকৃতির সাজ :: সবুজের ডালি সাজিয়েছে আইইউবিএটি ক্যাম্পাস

নিউজ ডেক্স : দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে আগে থেকেই গ্রিন ক্যাম্পাসের স্বীকৃতি ছিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি) ক্যাম্পাসের। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে গত পাঁচ মাস ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় এখন সবুজে সবুজে ভরে গেছে পুরো ক্যাম্পাস। সবুজ ঘাস, সবুজ মাঠ আর সবুজে ছাওয়া নানা গাছ। সবুজ যেন তার রূপের ডালি সাজিয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য অপেক্ষা করছে।

সম্প্রতি আইইউবিএটি ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ভবনের পেছনের দিকে রয়েছে বিশাল লেক। এর চারদিকে বকুল আর কৃষ্ণচূড়াগাছ। গাছগুলো যেন সবুজের দ্যুতি ছড়িয়ে বসে আছে। আর এই লেকের পাশ ঘেঁষেই শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার জন্য আছে ‘স্টাডি এরিনা’। এর পেছনের দিকটার নামকরণ হয়েছে ‘বকুলতলা’। উন্মুক্ত স্টাডি এরিনায় একসঙ্গে ৮০০ শিক্ষার্থী গ্রুপ করে পড়াশোনা করতে পারলেও এখন সেখানে সুনসান নীরবতা।

আইইউবিএটির সুবিশাল মাঠটি যেন সবুজ চাদর বিছিয়ে বসে আছে। মসজিদ ও শহীদ মিনারের চারদিকের বৃক্ষরাজি আচ্ছাদিত সবুজের সমারোহ। উন্মুক্ত ক্যাফেটেরিয়া ‘লেমন লাইম’-এর যেন অপেক্ষার প্রহর কাটছে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও আইবিএর (ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) সাবেক পরিচালক শিক্ষাবিদ ড. এম আলিমউল্যা মিয়ান ১৯৯১ সালে আইইউবিএটি প্রতিষ্ঠা করেন। রাজধানীর উত্তরায় ২০ বিঘা জমির ওপর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোম ক্যাম্পাস। দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পথিকৃৎ বিশ্ববিদ্যালয়টি করোনাকালে অনলাইন ক্লাসেও এগিয়ে রয়েছে।

বর্তমানে ছয়টি অনুষদের অধীনে ১১টি বিভাগে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে পড়ালেখা করছে প্রায় সাত হাজার শিক্ষার্থী। আইইউবিএটি দেশে প্রথম বিবিএ, হোটেল ম্যানেজমেন্ট এবং বেসরকারিভাবে প্রথম অ্যাগ্রিকালচার, নার্সিং ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং প্রগ্রাম চালু করে।

আইইউবিএটির প্রতিষ্ঠাতা ড. এম আলিমউল্যা মিয়ান সর্বপ্রথম ২০০৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে গ্রিন ক্যাম্পাস হিসেবে ঘোষণা করেন। তবে এই সবুজ ক্যাম্পাসের খবর শুধু দেশেই নয়, পৌঁছে গেছে বিশ্বদরবারেও। এ জন্যই ‘ইউআই গ্রিন মেট্রিক ওয়ার্ল্ড র‍্যাংকিং ২০১৯’ অনুযায়ী গ্রিন ক্যাম্পাস হিসেবে দেশের দ্বিতীয় শীর্ষস্থানের স্বীকৃতি পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। ছাত্র-ছাত্রীরা এখানে পা রেখে শুধু বুক ভরে নিঃশ্বাসই নয়, উদ্যম আর আত্মবিশ্বাসেও বলীয়ান হন। আর এ জন্যই আইইউবিএটির স্লোগান ‘অ্যান এনভায়রনমেন্ট ডিজাইনড ফর লার্নিং’।

আইইউবিএটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুর রব কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘গাছপালা ও সবুজের সমারোহ থাকলে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত হয়। এ ছাড়া পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, নান্দনিকতাসহ নানা বিষয় আমাদের গ্রিন ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্য। ছেলে-মেয়েরা যখন পুকুরপারে বা গাছের নিচে বসে তখন তাদের নিজেদেরও চিত্তবিনোদন ঘটে। আমাদের পুরো ক্যাম্পাসই পরিবেশবান্ধব। ভবনটা এমনভাবে তৈরি বিদ্যুৎ চলে গেলেও সমস্যা হয় না, বাতাসে ভরপুর থাকে। আমাদের ক্লাসরুমে এসি নেই। আসলে আমাদের এসির কোনো প্রয়োজনই হয় না। আশা করছি, শিগগিরই আমাদের এই গ্রিন ক্যাম্পাস শিক্ষার্থীদের পদচারণে মুখরিত হয়ে উঠবে। সরকার বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ঘোষণা দিলে আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস পরিচালনার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছি।’

করোনা মহামারিতে নতুন ভর্তীচ্ছু শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে দেশের অন্যতম এই বিশ্ববিদ্যালয়। ‘ফল সেমিস্টারে’ ভর্তীচ্ছু শিক্ষার্থীদের ভর্তি ফির ওপর শতকরা ৭৫ ভাগ এবং টিউশন ফির ওপর শতকরা ১৫ ভাগ ফি কমানোর ঘোষণা দিয়েছে আইইউবিএটি। এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ ৫ পেলে শতভাগ বৃত্তিতে পড়তে পারেন শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া ১০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত মেধাবৃত্তি তো রয়েছেই। মেয়েদের উচ্চশিক্ষায় উৎসাহিত করতে ১৫ শতাংশ বিশেষ বৃত্তিসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ৯০টি বৃত্তি দেওয়া হয়।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়টি গত ২৫ মার্চ থেকে অনলাইনে ক্লাস চালু করে। ইউজিসির নিয়ম অনুসরণ করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সফলভাবে স্প্রিং ও সামার ২০২০ সেমিস্টারের অনলাইন ক্লাস এবং পরীক্ষা শেষ করেছেন। চাকরির বাজারে আইইউবিএটির স্নাতকরা তাঁদের কর্মদক্ষতা, মেধা, শ্রম ও নিয়মানুবর্তিতা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন। এম আলিমউল্যা মিয়ান রিসার্চ সেন্টারের উদ্যোগে নিয়মিতই পরিচালনা করা হচ্ছে গবেষণা কার্যক্রম।

আইইউবিএটির উপাচার্য আরো বলেন, ‘২০১৮ সালে আমরা একটি লার্নিং সফটওয়্যার ডেভেলপ করেছিলাম। শিক্ষকদেরও এ ব্যাপারে যথাযথ প্রশিক্ষণ শেষ করা হয়েছিল, যা এই করোনাকালে কাজে লেগেছে। অনলাইনে নির্বিঘ্নে ক্লাস চলছে। শিক্ষার্থীরাও ক্লাস-পরীক্ষায় সাবলীলভাবে অংশ নিচ্ছে। অনলাইনে পুরোপুরিভাবে আমাদের পড়ালেখা চলছে।’ কালের কন্ঠ

 

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।