রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৫০ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
২৪ ঘন্টা পুলিশি পাহাড়ায় গৃহবন্দী গুরুতর অসুস্থ্য বুলবুলের চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন প্রধানমন্ত্রী

বিনোদন ডেক্স : মুক্তিযোদ্ধা, গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের চিকিৎসার যাবতীয় দায়িত্ব নিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  গত  বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল লেখেন, ‘একটি ঘরে ছয় বছর গৃহবন্দী থাকতে থাকতে আমি আজ উল্লেখযোগ্যভাবে অসুস্থ। আমার হার্টে আটটা ব্লক ধরা পড়েছে। এরই মধ্যে কাউকে না জানিয়ে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলাম। সেখানে সিসিইউতে চার দিন ছিলাম। আগামী ১০ দিনের মধ্যে হার্টের বাইপাস সার্জারি করানোর জন্য প্রস্তুত আছি।’ ফেসবুকের এ পোস্টটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার নজরে এলে তিনি আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।

তার ছেলে জানান, সপ্তাহখানেক আগে বাবাকে একদম নরমাল একটা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সাধারণ একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যাই। সেখান থেকে আমাদের দ্রুত জানানো হয়, বাবার মাইল্ড অ্যাটাক হয়েছে। দ্রুত করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি করাতে হবে। তাৎক্ষণিকভাবে আমরা তাঁকে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে নিয়ে যাই। তাঁরা সিসিইউতে ভর্তি করালেন। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জানতে পারলাম, তাঁর হার্টে আটটি ব্লক ধরা পড়েছে। এর মধ্যে দুটি ব্লক মেজর। পরামর্শ দিলেন বাবার দ্রুত বাইপাস করাতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এরই মধ্যে বাবার চিকিৎসাসেবা ও এর যাবতীয় কিছু নিজ দায়িত্বে নিয়েছেন। সন্তান হিসেবে এখন শুধু বাবার সুচিকিৎসা চাইছি। দেশবাসী সবাই আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন, তিনি যেন সুস্থ হয়ে আবার আগের মতো গানে ব্যস্ত হন।’

 

গত ১৬ মে বুধবার ফেসবুকে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল ফেইজবুকে লেখেন, ‘আমি এখন ২৪ ঘণ্টা পুলিশি পাহারায় গৃহবন্দী থাকি, একমাত্র সন্তানকে নিয়ে। এ এক অভূতপূর্ব করুণ অধ্যায়।’ গৃহবন্দী থাকার কারণ হিসেবে তিনি লিখেছেন, ‘বন্ধুরা, সরকারের নির্দেশে ২০১২ সালে আমাকে যুদ্ধাপরাধীর ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় সাক্ষী হিসেবে দাঁড়াতে হয়েছিল। সাহসিকতার সঙ্গে সাক্ষ্য-প্রমাণ দিতে হয়েছিল ১৯৭১ সালে ঘটে যাওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলখানার গণহত্যার সম্পূর্ণ ইতিহাস। ওই গণহত্যা থেকে বেঁচে যাওয়া পাঁচজনের মধ্যে আমি একজন। হত্যা করা হয়েছিল একসঙ্গে ৪৯ জন মুক্তিযোদ্ধাকে। কিন্তু এই সাক্ষ্য দেওয়ার কারণে আমার নিরপরাধ ছোট ভাই মিরাজকে হত্যা করা হবে, তা কখনো বিশ্বাস করতে পারিনি। সরকারের কাছে বিচার চেয়েছি, বিচার পাইনি।’

আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল ফেসবুকে লেখা তাঁর এই স্ট্যাটাসে একদিকে যেমন নিজের মনে জমে থাকা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, পাশাপাশি নিজের চিকিৎসার জন্য কারও কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা চাননি। তিনি লিখেছেন, ‘কোনো সরকারি সাহায্য কিংবা শিল্পী, বন্ধুবান্ধবের সাহায্য আমার দরকার নাই। আমি একাই যথেষ্ট। শুধু অপারেশনের আগে ১০ সেকেন্ডের জন্য বুকের মাঝে বাংলাদেশের পতাকা আর কোরআন শরিফ রাখতে চাই।’

আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের এই স্ট্যাটাসের পর দেশের সংগীত জগতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দ্রুত নিজেদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। ফেসবুকে অনেকেই এই গুণী মানুষটির চিকিৎসার জন্য এখনই সরকারকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি সবাই আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন।

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।