শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৪৬ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
বাইপাস নয়, রিং পরানো হয়েছে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলকে

 

বিনোদন ডেক্স : আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের হৃদ্‌যন্ত্রে আটটা ব্লক ধরা পড়ার পর শুরুতে বলা হয়েছিল, বাইপাস করাতে হবে। দেশের গুণী এই সংগীত ব্যক্তিত্বের শারীরিক অবস্থার খবর জানতে পেরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর কার্যালয়ের পরিচালক চিকিৎসক জুলফিকার লেনিনকে দায়িত্ব দেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার। এরপর প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের পরিচালকের নেতৃত্বে একটি চিকিৎসক দল আবারও পরীক্ষা শেষে সিদ্ধান্ত নেয়, বাইপাস নয়, আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের হৃদ্‌যন্ত্রের ব্লকগুলোতে রিং (স্টেন্ট) পরাতে হবে।

গতকাল শনিবার রাজধানীর জাতীয় হৃদ্‌রোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক আফজালুর রহমানের তত্ত্বাবধানে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের হৃদ্‌যন্ত্রে দুটি স্টেন্ট পরানো হয়। আজ রোববার সকালে যখন তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা হয়, তখন জানা গেছে, আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল এখন সুস্থ আছেন।

আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের একমাত্র ছেলে সামির আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘চিকিৎসার জন্য বাবাকে গত বৃহস্পতিবার জাতীয় হৃদ্‌রোগ ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা শেষে শনিবার তাঁর হৃদ্‌যন্ত্রে স্টেন্ট পরানো হয়। সবাই বাবার জন্য দোয়া করবেন, যেন তিনি আগের মতো আবারও গানে ব্যস্ত হতে পারেন। বাবার সবকিছু এখনো গানকে ঘিরেই।’

মুক্তিযোদ্ধা, গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল তাঁর সর্বশেষ শারীরিক অবস্থার কথা গত ১৬ মে ফেসবুকে একটি পোস্টের মাধ্যমে তুলে ধরেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমি এখন ২৪ ঘণ্টা পুলিশ পাহারায় গৃহবন্দী থাকি, একমাত্র সন্তানকে নিয়ে। এ এক অভূতপূর্ব করুণ অধ্যায়। একটি ঘরে ৬ বছর গৃহবন্দী থাকতে থাকতে আমি উল্লেখযোগ্যভাবে অসুস্থ। আমার হার্টে ৮টা ব্লক ধরা পড়েছে, বাইপাস ছাড়া চিকিৎসা সম্ভব না।’

 

আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের সেই পোস্ট এরই মধ্যে দুই সহস্রাধিকেরও বেশি শেয়ার হয়েছে। শিল্পী-সহকর্মী থেকে শুরু করে ভক্তরাও প্রিয় মানুষটির সুস্থতা কামনা করে মন্তব্য করেন। আবেগঘন এই পোস্ট নজরে আসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। এরপর প্রধানমন্ত্রী গুণী মানুষটির চিকিৎসার যাবতীয় দায়িত্বভার নেওয়ার ঘোষণা দেন।

সংগীতজগতে অবদানের জন্য আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং রাষ্ট্রপতির পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হন। মুক্তিযুদ্ধে যখন অংশ নেন, তখন তাঁর বয়স মাত্র ১৫ বছর। সত্তরের দশকের শেষ দিকে ‘মেঘ বিজলি বাদল’ ছবিতে সংগীত পরিচালনার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। তিনি গানের অ্যালবাম করেছেন এবং অসংখ্য চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনা করেছেন। তাঁর সুরে ও সংগীতে বাংলাদেশের প্রথিতযশা শিল্পীদের পাশাপাশি এ প্রজন্মের অনেকে গান গেয়েছেন।

আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল তিন শতাধিক চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনা করেছেন। চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনা করে দুই বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। প্রথমটি ছিল ২০০১ সালে ‘প্রেমের তাজমহল’ আর দ্বিতীয়টি ছিল ‘হাজার বছর ধরে’ ছবির জন্য।

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।