রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৪৮ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ:
বিমানবন্দর সড়কে  যানজট নিত্যদিনের : ব্যাংকক থেকে বিমানবন্দরে আড়াইঘন্টা , ফার্মগেট যেতে সাড়ে ৩ ঘন্টা!গলারকাটা বিআরটি প্রকল্প

নিউজ ডেক্স : ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের উত্তরা থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত যানজট নিত্যদিনের। এ জটে পড়ে অনেক বিদেশগামি যাত্রী ফ্লাইট মিস করেন, কেউ কেউ ট্রেন মিস করেন, অনেকে সিডিউল টাইমে অফিসে পৌছতে পারেন না্

ব্যাংকক থেকে বিমানবন্দরে আসতে  সময় লাগে আড়াইঘন্টা আর বিমানবন্দরে নেমে ফার্মগেটে পর্যন্ত যেতে সময় লাগে সাড়ে ৩ ঘন্টা। এটা নিত্যদিনের ঘটনা, কিন্ত প্রতিকার নেই।কর্তৃপক্ষ উদাসিন, কম্ভুকর্ন! এ নিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের রিপোর্টার জয়শ্রী বাদুড়ি সরেজমিন প্রতিবেদনে তুলে ধরেছেন বিস্তারিত। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘড়ির কাঁটায় সকাল ৮টা বেজে ১০ মিনিট। রাজধানীর উত্তরা থেকে বনানী অফিসে যাওয়ার জন্য রওনা হয়েছেন বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা সাদমান অভি। তিনি বলেন, প্রতিদিন অফিসে যেতে এয়ারপোর্ট মোড়ে যানজট পোহাতে হয়। মাঝে মাঝে ঘণ্টা চলে যায় জসীমউদ্দীন মোড় থেকে এয়ারপোর্ট মোড় পেরোতে। ফেরার সময়ও কাওলা থেকে যানজটে পড়তে হয়।

গত রবিবার এবং সোমবার দিন রাতের বিভিন্ন সময়ে গিয়ে দেখা গেছে এ রোডে যানজট। মাঝে মাঝে যানজটে পড়ে যাত্রীরা ফ্লাইট এবং ট্রেন মিস করেন। কাকডাকা ভোর কিংবা মধ্যরাত কখন এ রোডে যানজট লাগবে বলতে পারেন না কেউই।

বেলা ১১টায় বিমানবন্দর মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, ঢিমে তালে চলছে গাড়ি। উত্তরবঙ্গগামী দূরপাল্লার বাস থেকে শুরু করে প্রাইভেট কার, সিএনজি থেমে থেমে চলছে। এয়ারপোর্ট মোড় ঘিরে কয়েকটি প্রকল্পের উন্নয়ন কাজ চলছে। বিশেষ করে গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে বিআরটি প্রকল্প। দীর্ঘদিন এ প্রকল্পের কারণে দুই পাশে রাস্তা বন্ধ করে রাখা হয়েছে। টিন, বাঁশ দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। মাটি খুঁড়ে তুলে রাখা হয়েছে রাস্তার ওপরে। রাস্তার পাশে ফুটপাত পর্যন্ত নেই। রাস্তা ভরে গেছে খানাখন্দে। ডানে বায়ে কাত হয়ে ভাঙাচোরা রাস্তায় চলে গাড়ি। লাফিয়ে পার হয়ে হয় মানুষকে। বৃষ্টি হলে এ রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী মানুষের বিপদের অন্ত থাকে না। হাঁটু পানিতে ডুবে যায় রাস্তা। গাড়ি চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে। দীর্ঘ যানজটে বসে থাকতে হয় মানুষকে।

রাস্তার কাওলা অংশে একপাশে চলছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ। এই প্রকল্পের এক অংশ এসে যোগ হয়েছে থার্ড টার্মিনাল প্রকল্পের পাশে। তবে এই প্রকল্প রাস্তার বাইরে থাকায় এই পথে যাতায়াতে কোনো প্রভাব পড়ে না। থার্ড টার্মিনাল প্রকল্পের কাজ বিমানবন্দর এলাকার ভিতরে চলায় বাইরে প্রকল্পের কোনো কাজ নেই। কিন্তু এসব প্রকল্পের কারণে এই রোডে কাওলার পরে ইউটার্ন নিয়ে যাওয়া হয়েছে র‌্যাব অফিসের সামনে। ফলে বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ কিংবা আন্তর্জাতিক টার্মিনাল থেকে বের হওয়া গাড়িগুলোকে পুরোটা সড়ক ঘুরে ইউটার্ন নিতে হয়। এই রুটে চলা দূরপাল্লার বাস, ট্রাকের সঙ্গে এসব গাড়ি যুক্ত হওয়ায় যানজট আরও তীব্র হয়।

গত রবিবার ব্যাংকক থেকে ঢাকায় ফিরেছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী সানজিদা জামান। তিনি বলেন, ব্যাংকক থেকে ফ্লাইটে ঢাকায় ফিরতে সময় লেগেছে আড়াই ঘণ্টা। আর বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট যেতে লেগেছে সাড়ে তিন ঘন্টা। বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে উত্তরা ঘুরে খিলক্ষেত যেতেই দেড় ঘণ্টা লেগেছে। যারা আরও দূর থেকে দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে ফেরেন তাদের জন্য কষ্ট হয়ে যায় এ যানজট। এ সড়কে সারাদিন ট্রাফিক পুলিশ কাজ করলেও যানজট নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খেতে হয় তাদের। বিআরটি প্রকল্প কাজে রাস্তা বন্ধ হয়ে থাকায় অলিগলি ঘুরে যাতায়াত করে গাড়ি। সরু ভাঙা রাস্তায় এই বিপুল গাড়ির চাপে তৈরি হয় যানজট।

গত রবিবারে ভোর সাড়ে ৬টায় ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনে চাটমোহর যাওয়ার টিকিট কেটেছিলেন সুধেন্দু রায়। বাড্ডা থেকে বিমানবন্দর স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ভোরবেলাতেও যানজটে ট্রেন মিস হয়েছে তার। তিনি বলেন, ভোরে রাস্তা ফাঁকা পাব ভেবে ৪০ মিনিট আগে বের হয়েছিলাম। কিন্তু কাওলা পার হতেই দেখি গাড়ির দীর্ঘ লাইন। দূরপাল্লার বাস, ব্যক্তিগত গাড়ি, সিএনজি থেমে আছে যানজটে। এই যানজট ঠেলে বিমানবন্দর স্টেশনে পৌঁছাতে পৌঁছাতেই ট্রেন স্টেশন ছেড়ে চলে যায়। নিজস্ব সূত্র/ বাংলাদেশ প্রতিদিন

 

এই ওয়েবসাইটের যে কোনো লেখা বা ছবি পুনঃপ্রকাশের ক্ষেত্রে ঋন স্বীকার বাঞ্চনীয় ।